ভারত ডব্লিউটিও-র প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত, এসসিও বৈঠকে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে জোর

ভ্লাদিভস্তক, ৭ সেপ্টেম্বর : ভ্লাদিভস্তকে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন-এর বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারত একটি উন্মুক্ত, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা -র সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে ভারত। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অমিতাভ কুমার ভারতের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন এবং বলেন, এসসিও সদস্য দেশগুলোর সম্মিলিত শক্তি ব্যবহার করে আঞ্চলিক সমবৃদ্ধির সুযোগ নেওয়া যেতে পারে।

ভারতের বক্তব্যে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, নির্ভরশীলতা হ্রাস, এবং প্রতিকূলতা সহিষ্ণু সরবরাহ শৃঙ্খল গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়। একইসঙ্গে, বাণিজ্য প্রবাহ বৃদ্ধি, আঞ্চলিক দুর্বলতা মোকাবিলা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাবও রাখা হয়। ভারত ডব্লিউটিও-এর আওতায় একটি “উন্নয়ন-কেন্দ্রিক এজেন্ডা”র কথা বলেছে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য পাবলিক স্টকহোল্ডিংয়ের স্থায়ী সমাধান, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কার্যকর বিশেষ ও ভিন্ন আচরণ, এবং ডব্লিউটিও-র দ্বিস্তরবিশিষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।

পরিষেবা বাণিজ্য এবং দক্ষ পেশাজীবীদের অস্থায়ী চলাচলকেও ভারত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে এবং ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলি বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলে আরও বেশি অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে মত প্রকাশ করে।

ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসঙ্গে ভারত প্রস্তাব করেছে, এসসিও-এর আওতায় ন্যায্য, স্বচ্ছ ও পূর্বানুমেয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো গঠনের জন্য নতুন কাজের ধারা চালু করা হোক। পাশাপাশি, সেরা অভ্যাস নিয়ে স্বেচ্ছা সহযোগিতা এবং নিরাপদ ও উদ্ভাবনভিত্তিক ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ভারত তার নিজস্ব ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো-এর সাফল্য তুলে ধরে, যার মধ্যে রয়েছে ইউপিআই (রিয়েল-টাইম লেনদেন ব্যবস্থা), ইন্ডিয়া স্ট্যাক (পরিচয় ও সম্মতির ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা), এবং ওএনডিসি (উন্মুক্ত ডিজিটাল বাণিজ্য প্ল্যাটফর্ম)।

ভারতের মতে, এসব উদ্ভাবন ভবিষ্যতের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি কার্যকর দিশা দেখাতে পারে, যা শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা অঞ্চল ও উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।