পশ্চিম তীর দখলের হুমকি ‘রেড লাইন’: সংযুক্ত আরব আমিরাতের কড়া বার্তা ইসরায়েলকে

আবু ধাবি/তেল আবিব, ৪ সেপ্টেম্বর: ইসরায়েলের সম্ভাব্য পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনাকে ঘিরে সংযুক্ত আরব আমিরাত কড়া বার্তা দিয়েছে। আবু ধাবি স্পষ্ট জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের যেকোনো ধরণের ‘অ্যাক্সনেশন’ (দখলদারি) আমিরাতের জন্য ‘রেড লাইন’, যা আব্রাহাম অ্যাকর্ডস-এর ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক হওয়া কূটনৈতিক সম্পর্ককে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

এই হুঁশিয়ারি আসে ইসরায়েলের কট্টরপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ-এর বক্তব্যের পর। তিনি দাবি করেন, ইসরায়েলকে পশ্চিম তীরের ৮২ শতাংশ অঞ্চল দখল করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-কেও এই পদক্ষেপে সমর্থন জানাতে আহ্বান জানান।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজনৈতিক বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী লানা নুসেইবেহ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “পশ্চিম তীরে দখলদারিত্ব ইউএই-র জন্য একটি রেড লাইন। এটি আমাদের আঞ্চলিক সংহতির প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করবে।” তিনি আরও বলেন, আমিরাত আব্রাহাম অ্যাকর্ডস-কে একটি পথ হিসেবে দেখেছে, যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্রের ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করা যায়।

ইসরায়েলি সূত্র জানিয়েছে, আমিরাতের এই সতর্কবার্তার পর, বৃহস্পতিবার নির্ধারিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের এজেন্ডা থেকে পশ্চিম তীর সংক্রান্ত আলোচনা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন বৈঠকে মূলত আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনা হবে। ইউএনজিএ-তে একাধিক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে পারে বলেও জানা গেছে।

গাজা যুদ্ধ (অক্টোবর ২০২৩) শুরুর পর থেকে এটিই ইউএই-র পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে তীব্র নিন্দা। উল্লেখযোগ্য যে, আমিরাতই আব্রাহাম অ্যাকর্ডস-এর অধীনে ইসরায়েলের সাথে সম্পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম উপসাগরীয় আরব দেশ।

এদিকে ইউএই-র সঙ্গে সৌদি আরব সহ অন্যান্য উপসাগরীয় রাষ্ট্ররাও ইসরায়েলের এই ‘বিপজ্জনক ও সন্দেহজনক দখলদারির পরিকল্পনা’র বিরুদ্ধে একযোগে সমালোচনা করেছে। বুধবার আবুধাবিতে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বৈঠকে বসেন। সেখানে দুই নেতা গাজার পরিস্থিতি ও দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।