পঞ্চায়েত এডভান্সমেণ্ট ইনডেক্সে ত্রিপুরার মোট ৪২টি পঞ্চায়েত গ্রেড এ পেয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১ সেপ্টেম্বর: সারা দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্যারামিটারে উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে রেখেছে ত্রিপুরা। পঞ্চায়েত এডভান্সমেণ্ট ইনডেক্সে পঞ্চায়েতী রাজ মন্ত্রকের ঘোষণায় ত্রিপুরার মোট ৪২টি পঞ্চায়েত গ্রেড এ পেয়েছে। তবে খুশির বিষয় যে রাজ্যের কোন পঞ্চায়েত গ্রেড ডি পায়নি। আর ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা শক্তিশালী হলে দেশ ও রাজ্য শক্তিশালী হবে। তাই স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের। আজ আগরতলার এডি নগরস্থিত স্টেট পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারে দুদিনের পঞ্চায়েতী রাজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত আমাদের অন্যতম ভিত্তি। এর মাধ্যমেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এই সরকার স্বচ্ছতাকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। অথচ আমরা দেখেছি বিগত ৩৫ বছরের রাজত্বে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতকে একটা রাজনৈতিক আখড়া বানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে বর্তমান সরকার। আমরা সাধারণ মানুষের জন্য নির্বাচিত হয়েছি এবং আমাদের অবশ্যই তাদের জন্য পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করতে হবে। আমাদের রাজ্যে প্রায় ৬০ থেকে ৭০% মানুষ গ্রামীণ অঞ্চলে বাস করেন। গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নয়নের উপর আমাদের জিএসডিপি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি নির্ভর করছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর আমাদের সরকার পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। কারণ গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন না হলে দেশ বা রাজ্য উন্নত হবে না। গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন হলেই রাজ্য বা শহরের উপর চাপ অনেক কমবে। তাই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের উপর অনেক গুরুদায়িত্ব রয়েছে। ২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতকে শক্তিশালী করতে গুরুত্ব দিয়েছে এই সরকার। আর ভারতবর্ষের একমাত্র রাজ্য ত্রিপুরা যেখানে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত পর্যন্ত ই অফিস চালু হয়েছে। এতে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পাশাপাশি মানুষের জন্য কাজ করার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতী রাজ ব্যবস্থায় বেশ ভালো কাজ করছে ত্রিপুরা। এক্ষেত্রে ৭টি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে ত্রিপুরা। দেশের এতগুলি জেলার মধ্যে ত্রিপুরার গোমতী জেলা সর্বশ্রেষ্ঠ জেলার মর্যাদা পেয়েছে। পঞ্চায়েত ডেবুলেশন ইনডেক্সে এবছর সারা দেশের মধ্যে ৭ম স্থান অধিকার করেছে ত্রিপুরা। যা ২০১৫তে ১৩তম স্থানে ছিল। পঞ্চায়েত এডভান্সমেণ্ট ইনডেক্সে পঞ্চায়েতী রাজ মন্ত্রকের ঘোষিত তালিকায় ত্রিপুরার মোট ৪২টি পঞ্চায়েত গ্রেড এ পেয়েছে। ৭২৮টি পঞ্চায়েত গ্রেড বি পেয়েছে। আর ৪০৬টি পঞ্চায়েত গ্রেড সি পেয়েছে। এরমধ্যে খুশির বিষয় যে রাজ্যের কোন পঞ্চায়েত গ্রেড ডি পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল ইন্ডিয়ার লক্ষ্যে ত্রিপুরার প্রতিটি পঞ্চায়েতে পিএফএমএস (পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) এর মাধ্যমে লেনদেন চালু হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে সুশাসন পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমাদের সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত দপ্তরের মন্ত্রী কিশোর বর্মন, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, অধিকর্তা প্রসূন দে, ভারত ইনিসিয়েটিভ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর নীরব কুমার কিশোর গিলানি সহ বিভিন্ন জেলার সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও পদস্থ আধিকারিকগণ।