বিহারে তিন পাকিস্তানি জঙ্গির অনুপ্রবেশ, রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার

পটনা, ২৮ আগস্ট— স্বাধীনতা দিবসের দিন নেপালের সীমান্ত পেরিয়ে বিহারে প্রবেশ করেছে তিন পাকিস্তানি জঙ্গি, এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে বিহার পুলিশ সদর দফতর। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, জইশ-ই-মোহাম্মদ নামক পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্য এই তিন সন্ত্রাসবাদী ইতোমধ্যেই রাজ্যে প্রবেশ করেছে। তাঁদের নাম হাসনাইন আলি (রাওয়ালপিন্ডি), আদিল হুসেন (উমরকোট), এবং মোহাম্মদ উসমান (ভাওয়ালপুর)। পুলিশ জানিয়েছে, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা কাঠমান্ডুতে এসে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে ১৫ আগস্ট বিহারে প্রবেশ করে।

এই তথ্য সামনে আসার পরই সীমান্তবর্তী সমস্ত জেলায় জঙ্গিদের নাম, ছবি এবং পাসপোর্টের বিবরণ পাঠিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা—রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, হোটেল, বাজার এবং জনবহুল এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরা। প্রত্যেক জেলা গোয়েন্দা শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়াতে এবং দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে।

পাশাপাশি, সশস্ত্র সীমা বল জওয়ানদের সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর ও রেলপথ নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আগে থেকেই তৎপর ছিল, এবার তাদের আরও বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “বিহার-নেপাল সীমান্ত বহুদিন ধরেই জঙ্গিদের জন্য সহজ রুট হয়ে উঠেছে। নেপালের সঙ্গে উন্মুক্ত সীমান্ত থাকায় সন্ত্রাসবাদীরা প্রায়শই এই পথ ব্যবহার করে অনুপ্রবেশ করে।”

অন্যদিকে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় রাহুল গান্ধীর চলমান ‘বিহার যাত্রা’কে ঘিরেও বিশেষ নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৭ আগস্ট সাসারাম থেকে যাত্রা শুরু করা রাহুল গান্ধীকে এখন থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে রাখা হবে, এবং জনসংযোগ কর্মসূচিতে বাড়তি নজরদারি রাখা হবে।

পুলিশ সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে অনুরোধ করেছে, কেউ যদি কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি বা আচরণ দেখতে পান, তাহলে অবিলম্বে পুলিশকে খবর দিতে হবে। জনসচেতনতা এবং সতর্কতা এই মুহূর্তে নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।