আগরতলা, ২৩ আগস্ট : রাজধানীর রাধা মাধব উন্নয়ন সংঘ এলাকায় এক যুবককে নেশা সামগ্রী বিক্রয়ের সময় জনতা হাতে-নাতে ধরে ফেলে। পরে তাকে পুলিশে হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এবং স্থানীয় মানুষের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া বইছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক মাস ধরেই এলাকায় একদল যুবক গোপনে নেশাজাত দ্রব্য বিক্রি করে আসছিল। এলাকা সংলগ্ন স্কুল, মন্দির ও আবাসিক বসতবাড়ি থাকার পরেও প্রশাসন এই বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছিল না। এলাকাবাসীরা জানান, তারা একাধিকবার এই বিষয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানালেও তেমন কোনও কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। এর ফলেই জনমনে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে।
শেষমেশ আজ সকালে এলাকাবাসী নিজেরাই উদ্যোগ নেন। বেশ কিছু মানুষ গোপনে অভিযুক্তদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে এক যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাকে আটক করা হয়। তার কাছে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় ব্রাউন সুগার, কিছু দামী সিগারেট, এবং নেশার অন্যান্য উপকরণ।
আটক যুবককে ব্যাপক জেরা করে জানা যায়, সে এক মাদকচক্রের সদস্য এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, অভিযুক্তদের বাড়ি আগরতলার দশমীঘাট এলাকায়। অভিযুক্তের এক সঙ্গী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ছুটে আসে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে এবং মাদক চক্রের মূল মাথাদের খুঁজে বের করতে তৎপরতা চালাচ্ছে।
এই সাহসিক কাজের জন্য এলাকাবাসী প্রশংসা পাচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে। তারা প্রমাণ করে দিয়েছেন, প্রশাসন নিরব থাকলে সাধারণ মানুষও মাদক চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। স্থানীয় এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, “যদি আমরা চুপ থাকতাম, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে চলে যেত। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরা নেবই। আজ সেই প্রথম পদক্ষেপ আমরা নিলাম। এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করলো যে, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই কেবল প্রশাসনের একার দায়িত্ব নয়, সাধারণ মানুষকেও তাতে ভূমিকা রাখতে হবে। পুলিশ ও জনগণের সম্মিলিত চেষ্টাতেই একমাত্র সম্ভব সমাজ থেকে নেশার কালো ছায়া দূর করা।
