গোলাঘাট উচ্ছেদ অভিযান: সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাবস্থার নির্দেশ

নয়াদিল্লি, ২৩ আগস্ট: অসমের গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাট ও সংলগ্ন গ্রামগুলিতে চলমান উচ্ছেদ ও ভাঙচুর অভিযান নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার (২২ আগস্ট) স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে আপাতত সব ধরনের উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

এই নির্দেশ আসে আবদুল খালেক সহ অন্যান্য আবেদনকারীদের দায়ের করা দুটি বিশেষ অনুমতি আবেদনের প্রেক্ষিতে, যেগুলি গৌহাটি হাইকোর্টের ১৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে।

আবেদনকারীরা জানান, তারা দীর্ঘ সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলে বসবাস করছেন এবং “দীর্ঘকালীন স্থায়ী বাসিন্দা” হওয়া সত্ত্বেও হাইকোর্ট তাদের জবরদস্তি উচ্ছেদ থেকে সুরক্ষা দিতে অস্বীকার করে। অভিযোগ, বন বিভাগের উচ্ছেদ নোটিশ যথাযথ প্রক্রিয়া, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কিংবা যথাযথ বসতি যাচাই ছাড়াই জারি করা হয়েছে, যা অসম বন বিধিমালা, ১৮৯১ এবং বনাধিকার আইন, ২০০৬ এর লঙ্ঘন।

২০২৫ সালের জুলাই মাসে অসম সরকার আবেদনকারীদের সাত দিনের মধ্যে দয়াং এবং দক্ষিণ নামবর সংরক্ষিত বন এলাকা খালি করার নির্দেশ দেয়। আবেদনকারীরা গৌহাটি হাইকোর্টে গিয়ে হেরে যান, কারণ হাইকোর্ট তাঁদের ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ বলে চিহ্নিত করে।

পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীরা জানান, তাঁদের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ, রেশন কার্ড এবং ভোটার তালিকাভুক্তির মতো প্রমাণ রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে তারা সরকার স্বীকৃত বাসিন্দা। তাঁরা আরও দাবি করেন, এই উচ্ছেদ ২০১৩ সালের ‘স্থান অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পুনর্বাসন আইনের’ এবং ২০১৫ সালের অসম বিধিরও লঙ্ঘন। একই সঙ্গে, ভারতীয় সংবিধানের ১৪, ১৯, ২১, ২৫ ও ৩০০-এ অনুচ্ছেদের অধীনে তাঁদের মৌলিক অধিকারও লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ।

বিচারপতি পামিডিঘান্টম শ্রী নারসিমহা এবং অতুল এস. চন্দুরকরের বেঞ্চ মামলাটি শুনে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নোটিশ জারি করতে বলেন এবং দ্রুত যোগাযোগের জন্য “দস্তি” পরিষেবার অনুমতি দেন। আদালত নির্দেশ দেয়, এসএলপি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব পক্ষ স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।

আইন বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলার রায় অসমে প্রশাসনিক ও নীতিগত পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানি এখন গোটা অঞ্চলের পক্ষপাতদুষ্ট জনগণ এবং আইনজীবী মহলে গভীর আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।