গুয়াহাটি, ১৬ আগস্ট: আসামে মুসলিম সম্প্রদায়কে সরকার পরিচালনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে—এই অভিযোগ তুলেছেন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এর বিধায়ক ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্ত্রিসভায় একজনও মুসলিম মন্ত্রী নেই। আসামের ৩৪টি জেলায় কোথাও কোনো মুসলিম এসপি বা ডিসি নেই। অথচ রাজ্যে বহু মুসলিম আইএএস ও আইপিএস অফিসার রয়েছেন। কিন্তু তাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হচ্ছে না।”
স্বাধীনতা দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণকে “দুর্ভাগ্যজনক” এবং “ঘৃণাভিত্তিক প্রচার” হিসেবে বর্ণনা করে রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই ভাষণে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরিবর্তে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অজানা কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে’—এই ধরনের বক্তব্য জনগণের মনে ভয় ছড়ানোর কৌশল।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির লাল কেল্লা থেকে এবং হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গুয়াহাটিতে একই বার্তা দিচ্ছেন—অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মিথ্যা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে।”
রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, আসামে মুসলমানরা প্রায় ৩৫ শতাংশ হলেও বিজেপি দলে একজনও মুসলিম বিধায়ক নেই। প্রশাসন এবং সরকার—উভয় ক্ষেত্রেই মুসলমানদের বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। “এইভাবে মুসলিমদের ‘বহিরাগত’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে সমাজে বিভাজন তৈরি করা যায়,” অভিযোগ তার।
অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি সত্যিই লক্ষ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী এসে থাকেন, তাহলে বিজেপি সরকার এত বছর ধরে কী করছিল? কেন্দ্রীয় সরকার, বিএসএফ বা রাজ্য সরকার কেন তা ঠেকাতে পারেনি?”
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মুসলিম শিক্ষার্থীদের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নিয়ে কটাক্ষেরও প্রতিবাদ করেন রফিকুল। তিনি বলেন, “একদিকে বলেন মুসলমানরা শিক্ষিত নয়, অন্যদিকে যারা উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে তাদের নিয়েও অপপ্রচার চালান। এই দ্বিচারিতা বন্ধ হোক।”
শেষে তিনি বলেন, “চাইল্ড ম্যারেজের মতো সমস্যা এক সময়ে ছিল, কিন্তু এখন তা হ্রাস পাচ্ছে। আমাদের আসল প্রাধান্য হওয়া উচিত—জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য কর্মসংস্থান, ঐক্য ও সম্প্রীতি।”

