নয়াদিল্লি, ১৫ আগস্ট: ‘সুদর্শন চক্র মিশন’ নামের একটি মহৎ উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মিশনের মাধ্যমে আগামী দশকের মধ্যে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন এবং সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে চালু করা হবে। ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ওই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে শুধু প্রতিরোধ নয়, পাল্টা আঘাত হানার সক্ষমতাও গড়ে তোলা হবে। আকাশ, ভূমি ও সাগর-সীমায় শত্রুদের দ্রুত নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ভারতের যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য দেশীয় জেট ইঞ্জিনের উন্নয়ন কতটা প্রয়োজন। তিনি বললেন, রক্ষণশীল উত্পাদন খাতে এগিয়ে চলা অপরিহার্য। ‘অপারেশন সিঁদুর’ সাফল্যের জন্য সামরিক বাহিনীকে সাধুবাদ জানান মোদি। তিনি বললেন, এ অভিযানে পাকিস্তানের ওপর জোরালো আঘাত হানা হয়েছে। সেই ক্ষত দেশের প্রতি দিন নতুন করে প্রকাশ পাচ্ছে। প্রসঙ্গত, এ বছর মোদি স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে রেকর্ড সৃষ্টি করে ১০৩ মিনিট কথা বলেছেন। যা ২০২৪ সালের তার ৯৮ মিনিটের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এটি তার দীর্ঘতম ভাষণ।
মোদী ভাষণে বলেন, ‘সুদর্শন চক্র মিশন’ ভারতের কৌশলগত, সামরিক, বেসরকারি ও ধর্মীয় সংবেদনশীল স্থাপনা রক্ষা করবে এবং নতুন ধরনের স্বয়ংসম্পূর্ণ অস্ত্র ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। এই সিস্টেমের লক্ষ্য ইসরায়েলের আইরন ডোমের মতো একটি বহুপর্দা প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক তৈরি করা, যা হামাস ও হিজবুল্লাহর হাজার হাজার রকেট মহিলা সম্ভব করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দশক অর্থাৎ ২০৩৫ সালের মধ্যে আমি চাই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে বিস্তৃত, শক্তিশালী ও আধুনিক করা হোক। আমরা শ্রীকৃষ্ণের সুদর্শন চক্র থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এই মিশন শুরু করছি। এই পুরো আধুনিক ব্যবস্থা তৈরি হবে দেশীয় মেধা ও তরুণদের ক্ষমতায়ন করে। তিনি এটাও বলেন, এই শক্তিশালী সিস্টেম শুধু সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ প্রতিহত করবে না, বরং প্রতিবাদী হামলাও চালাবে। দেশীয় উদ্ভাবন ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে ‘সুদর্শন চক্র মিশন’ দেশের আত্মনির্ভরতার সংকল্পকে প্রতিফলিত করে।
পাকিস্তানের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মোদী বলেন, সন্ত্রাসীদের আর তাদের আশ্রয়দাতাদের উভয়কেই সমানভাবে মোকাবেলা করা হবে এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে, যে কাউকে যেকোনো ভবিষ্যৎ অনুপ্রবেশের জন্য শাস্তি দিতে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সফলতায় পুনরায় গর্ব প্রকাশ করে মোদী বলেন, এটি পাকিস্তানের ওপর একটি কঠোর আঘাত, যার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রতিদিন নতুন হয়। ভারত আর পাকিস্তানের পরমাণু ব্ল্যাকমেলিং সহ্য করবে না এবং সীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পাহালগামে সন্ত্রাসী আক্রমণে ২৬ জন নিহত হন। এর জবাবে ভারত কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়েছিল, যার মধ্যে বহিরাগত জল-চুক্তি স্থগিত করা অন্যতম ছিল। ৭ মে থেকে এ অভিযান শুরু হয়, ১০ মে দুই দেশের মধ্যে একটি আপোসংহার হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভারত সন্ত্রাসবাদ ও প্রতিবাদী হামলার বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

