দিল্লি-এনসিআর-এ ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত জনজীবন, আবহাওয়া দপ্তরের রেড অ্যালার্ট জারি

নয়াদিল্লি, ১৪ আগস্ট: দিল্লি ও এনসিআর-এ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টিপাত জনজীবনকে চরমভাবে ব্যাহত করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সকালেই রাজধানী এবং সংলগ্ন এলাকাগুলির জন্য ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ থেকে উন্নীত করে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। দিল্লি, নয়ডা ও গুরগাঁওয়ের বিভিন্ন অংশে জলজটের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গুরগাঁওয়ের বাসাই রোড, দিল্লির আইটিও, ময়ূর বিহার, রিং রোড, লাজপত নগরের মতো এলাকায় রাস্তায় হাঁটু জল জমে গেছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি ও এনসিআরের অধিকাংশ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে, এবং কোথাও কোথাও হতে পারে ভারী বর্ষণ। সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জলাবদ্ধ রাস্তাগুলোর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক অফিস-চলাচলকারী ব্যক্তি এবং স্কুলগামীদের যাত্রাপথে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

এই মাসের শুরুর দিকেও রাজধানীতে অতিভারী বৃষ্টির কারণে দিল্লি বিমানবন্দরে একাধিক ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত হয়েছিল। একই পরিস্থিতি আজ আবারও তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ফ্লাইট সংক্রান্ত তথ্য আগেভাগে যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, দিল্লিতে চলতি বছরে ইতিমধ্যেই ৭০৬ মিমি বৃষ্টি হয়েছে, যা বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের ৯১ শতাংশ। স্কাইমেট ওয়েদার-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মহেশ পালাওয়াত বলেন, যদিও এ বছর ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি নেই, তবে উত্তর-পশ্চিম ভারতে সক্রিয় মৌসুমী ব্যবস্থার কারণে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে।

দিল্লির পাশাপাশি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীরেও আজ থেকে আগামী কয়েকদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি। দক্ষিণ ভারতে তেলেঙ্গানায় ১৪ আগস্ট চরম ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, অসম ও মেঘালয়েও একই ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অংশে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া (৩০-৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা) বইতে পারে। বিশেষ করে ছত্তিশগড়, বিদর্ভ, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

রাজধানীর নাগরিকদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে না যেতে এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মানতে। জলজমা রাস্তায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও খোলা তারের থেকে দূরে থাকার কথাও বলা হয়েছে। দিল্লি মেট্রো পরিষেবা এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক থাকলেও কোথাও কোথাও সামান্য দেরির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আবহাওয়ার এই প্রতিকূল পরিস্থিতি আরও কিছুদিন চলতে পারে বলে ধারণা। অগস্ট মাসে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় নাগরিকদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।