নয়াদিল্লি/নবাদা, ১৩ আগস্ট: লোকসভায় বিরোধী দলনেতা ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আগামী ১৯ আগস্ট বিহারের নবাদা জেলায় পৌঁছাবেন এবং ‘ভোট চুরি’ ইস্যুতে শহরে একটি বিশাল পদযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন। এই কর্মসূচি কংগ্রেসের ‘সংসদ যাত্রা’-র অংশ, যা ১৭ আগস্ট রোহতাস থেকে শুরু হবে এবং গয়া জেলা হয়ে ১৯ তারিখে নবাদা পৌঁছাবে। জেলার কাশীচক অঞ্চলে ভোটার তালিকায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসায় নবাদাকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি সতীশ কুমার ওরফে মণ্টন সিংহ। তাঁর দাবি, এক বাড়ির নম্বরে ১৩৫ জনের নাম রয়েছে, আবার কোথাও স্বামী জীবিত থাকলেও স্ত্রীর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা জালিয়াতি কেবল এক-দুটি আসনে নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে ঘটছে। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ নীতির প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে শাসকদল বিজেপির যোগসাজশ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা সংবিধান রক্ষার লড়াই করছি। কমিশনের কাছে এখন আর অজুহাত নেই—সব প্রমাণ সামনে এসেছে।”
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে, যেখানে নাগরিকরা ভোট চুরির বিরুদ্ধে সই করতে পারছেন এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাবদিহি দাবি করতে পারছেন। গত সপ্তাহে রাহুল গান্ধী ‘ইন্ডিয়া ব্লক’ বৈঠকে দুটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ বিশদে ব্যাখ্যা করেন। কর্ণাটকের মহাদেবপুরা আসনে এক কামরার ঘরে ৮০ জন ভোটারের নাম তালিকায় থাকার অভিযোগ তিনি সামনে আনেন। তাঁর দাবি, বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল আসনে এই অনিয়মের কারণেই কংগ্রেস পরাজিত হয়েছে।
রাহুল গান্ধী ও অন্যান্য বিরোধী নেতারা এর আগে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন, যেখানে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। গ্রেফতার হওয়া নেতাদের মধ্যে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, অখিলেশ যাদব ও সঞ্জয় রাউত। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে রাহুল বলেন, “এই লড়াই রাজনৈতিক নয়, এটি সংবিধান রক্ষার লড়াই। ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ নীতির জন্য আমরা রাস্তায় নেমেছি।”
নবাদায় রাহুল গান্ধীর আগমনের আগে দলীয় প্রস্তুতি তুঙ্গে। কংগ্রেস কার্যালয়ে কর্মীদের ‘ভোট চুরি’ নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়েছে, যাতে রাহুল গান্ধী নিজে অনিয়ম কীভাবে ঘটছে, তা ব্যাখ্যা করেছেন। ১৯ আগস্ট সদ্ভাবনা চৌক থেকে শুরু হবে পদযাত্রা, যাতে মহাগঠবন্ধনের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এই সফর বিহারে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা অনেকটাই বাড়িয়ে তুলেছে।

