নয়াদিল্লি, ১২ আগস্ট:সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চল থেকে সমস্ত পথকুকুরকে সরানোর সিদ্ধান্তকে তীব্র সমালোচনা করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার এক্স-এ দেওয়া পোস্টে তিনি একে “দশকব্যাপী মানবিক, বিজ্ঞানসম্মত নীতির পশ্চাদপসরণ” বলে অভিহিত করেন।
রাহুল গান্ধী লেখেন,“দিল্লি-এনসিআরের সব পথকুকুরকে সরানোর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানবিক, বিজ্ঞানসম্মত নীতির প্রতি এক ধাপ পশ্চাদপসরণ। এই নির্বাক প্রাণীরা কোনো ‘সমস্যা’ নয়, যাদের মুছে ফেলা যায়। আশ্রয়, জীবাণুনাশ, টিকাকরণ এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক যত্ন কুকুর ও মানুষের সহাবস্থানকে নিরাপদ করতে পারে—নির্মমতা ছাড়াই। এই ধরণের সামগ্রিক উচ্ছেদ নিষ্ঠুর, স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন এবং আমাদের করুণাবোধকে লোপ করে।”
তিনি আরও বলেন, “জনসুরক্ষা ও পশুকল্যাণ—দু’টিকেই একসাথে রক্ষা করা সম্ভব।”
রাহুল গান্ধী ও তাঁর পরিবার বহুদিন ধরেই কুকুরদের প্রতি ভালোবাসার জন্য পরিচিত। তাঁর পোষা কুকুর ‘পিদি’ ২০১৭ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ২০২৩ সালে তিনি তাঁর মা সোনিয়া গান্ধীকে একটি পোষ্য কুকুর ‘নূরী’ উপহার দেন।
উল্লেখ্য, সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে বাড়তে থাকা কুকুর কামড়ানো ও জলাতঙ্কজনিত মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগের কারণে সব পথকুকুরকে আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে।
আদালত জানায়, এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পেশাদার কর্মী থাকতে হবে, যারা কুকুরদের ধরতে, জীবাণুনাশ ও টিকাকরণে দক্ষ। তবে কুকুরদের মুক্তভাবে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
ন্যায়পালিকা আরও হুঁশিয়ারি দেয়, যদি কোনো সংগঠন এই নির্দেশ প্রতিহত করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে “কঠোরতম ব্যবস্থা” নেওয়া হবে।
জাস্টিস জে.বি. পারদিওয়ালা ও জাস্টিস আর. মাহাদেবনের বেঞ্চ জানায়, “আমরা এই নির্দেশ নিজেদের জন্য দিচ্ছি না, এটি জনস্বার্থে। কোনো আবেগকে এখানে স্থান দেওয়া যাবে না। অবিলম্বে সব কুকুরকে আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আপাতত নিয়ম ভুলে যান।”
এই নির্দেশের পর দিল্লি সরকার রাজধানী ও এনসিআরের বিভিন্ন পৌর সংস্থাকে দ্রুত কুকুর আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি, কুকুর স্থানান্তর এবং আদালতকে অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

