মুম্বই-কলকাতা ইন্ডিগো ফ্লাইটে সহযাত্রী কর্তৃক চড় খাওয়া অসমের যুবক নিখোঁজ, পরিবারের মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার

 মুম্বই,২ আগস্ট : সম্প্রতি মুম্বই-কোলকাতা ইন্ডিগোফ্লাইটে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনাঘটেছে, যেখানে একজন যুবকপ্যানিক অ্যাটাকের শিকার হন এবংতার সহযাত্রী এক অজানা কারণেতাকে চড় মারে।সেই যুবক, হোসেন আহমেদমাজুমদার, যিনি একজন প্রশিক্ষক(জিম ট্রেইনার) হিসেবে মুম্বইয়ে কাজকরতেন, ঘটনার পর নিখোঁজহয়ে গেছেন। তারপরিবার এখন অত্যন্ত উদ্বিগ্নএবং প্রশাসনের কাছে তার নিরাপত্তাও অবস্থান সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্যপাওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধজানিয়েছে। সূত্রঅনুযায়ী, হোসেন আহমেদ মাজুমদারমুম্বই থেকে কোলকাতা যাত্রাকরছিলেন, এবং মাঝ-আকাশেহঠাৎ তিনি প্যানিক অ্যাটাকেরশিকার হন। বিমানেরসহায়ক কর্মীরা তাকে তৎক্ষণাৎ সাহায্যকরতে এগিয়ে আসে।তার অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে, তিনি কিছুটাউদ্বিগ্ন ও অশান্ত ছিলেন। তবে,সেই সময় এক সহযাত্রীআচমকাই তাকে চড় মারে,যা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ছিল। এইঘটনাটি বিমানের অন্যান্য যাত্রীদের মোবাইল ক্যামেরায় ধরাপড়ে এবং তা সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতেদেখা যায়, হোসেন আহমেদমাজুমদার বিমানের কর্মীদের সাহায্যে তার সিটে ফিরেযাওয়ার সময় সহযাত্রীটির চড়েরশিকার হন। বিমানেরসহকারী কর্মীরা দ্রুত পরিস্থিতি সামালদেয়, কিন্তু সে সময়েরমধ্যেই হোসেনের অবস্থা আরও খারাপহতে থাকে। তারপরিণতি কী হবে, সেসম্পর্কে অনেকেই শঙ্কিত ছিলেন। হোসেনআহমেদ মাজুমদারের পরিবার, যারা সিলচর বিমানবন্দরেতার আগমন নিয়ে অপেক্ষাকরছিল, দুঃখের সাথে জানায়যে তাদের ছেলে কখনওসিলচর বিমানবন্দরে পৌঁছায়নি। তিনিকোলকাতা থেকে একটি সংযোগীফ্লাইটে সিলচর যাওয়ার কথাছিল। কিন্তুযখন তাকে সেখানে পাওয়াযায়নি, তখন পরিবারের সদস্যরাসিলচর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনএবং স্থানীয় পুলিশ স্টেশনেও যোগাযোগকরেন। তবে,তারা এখনও পর্যন্ত কোনোসদর্থক তথ্য পায়নি। অবশেষে,হোসেনের পরিবারের সদস্যরা জানান যে তারফোন নম্বরটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে, যাসন্দেহজনক এবং উদ্বেগজনক হয়েদাঁড়িয়েছে। মনেকরা হচ্ছে যে তিনিমুম্বইতেই তার ফোনটি ভুলবশতরেখে এসেছেন। হোসেনেরবাবা, যিনি বর্তমানে ক্যান্সারেরচিকিৎসা নিচ্ছেন, তার ছেলের নিখোঁজহওয়া জানার পর অত্যন্তমর্মাহত। “আমরা জানতামসে কঠোর পরিশ্রম করেমুম্বইয়ে আমাদের জীবিকা নির্বাহকরছে, কিন্তু এখন সেকোথায়, আমি কিছুই জানিনা,” বলে তার একআত্মীয় জানান। হোসেনেরপরিবার এবং আত্মীয়রা জানিয়েছেনযে তারা একাধিকবার পুলিশকেজানিয়েছেন, কিন্তু এখনও কোনোপ্রাসঙ্গিক বা স্পষ্ট তথ্যপাওয়া যায়নি। উদহরবন্দথানার পুলিশ জানিয়েছে, তারাবিষয়টি খতিয়ে দেখছে, তবেএখন পর্যন্ত তারা কোনো তথ্যনিশ্চিত করতে পারেনি।সিলচর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও এই ঘটনায় অবগত,কিন্তু তারা এখনও কিছুজানাতে পারেনি। হোসেনেরআত্মীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, কেনপুলিশ বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষতৎকালীন পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্যদেয়নি। তারপরিবার মনে করছে, বিমানেরএয়ারলাইন্স কোম্পানি ইন্ডিগো এবং স্থানীয় প্রশাসনআরও দ্রুত ব্যবস্থা নিলেহয়তো হোসেনের খোঁজ পাওয়া যেত। এদিকে,যাত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনএই ঘটনায় বিস্মিত এবংক্ষুব্ধ। তাদেরঅভিযোগ, সহযাত্রীর এমন আচরণ একেবারেইঅগ্রহণযোগ্য এবং এটি হোসেনেরমানসিক অবস্থাকে আরও খারাপ করেছে। বিমানেরক্রু সদস্যরা যথাসম্ভব সাহায্য করেছেন, কিন্তু যাত্রীটির আক্রমণজনকআচরণ বিমানের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার প্রতিএক বড় প্রশ্ন তুলেদেয়। বিমানকর্তৃপক্ষ যদিও এক বিবৃতিতেজানিয়েছে, তারা এই ঘটনাটিতদন্ত করে দেখছে এবংসংশ্লিষ্ট যাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।তবে, এ ব্যাপারে বিস্তারিতকোন তথ্য এখনও প্রকাশিতহয়নি। হোসেনেরপরিবার, যাদের আশা ছিলতিনি শীঘ্রই বাড়ি ফিরবেন,এখন তাদের আদরের ছেলেকোথায় এবং তার কীঅবস্থা, তা জানার জন্যঅত্যন্ত উদ্বিগ্ন। ক্যান্সারেআক্রান্ত বাবা তার ছেলেরখোঁজে প্রতিদিন রক্তাক্ত হৃদয়ে জীবনযাপন করছেন। তারাসরকারের কাছে আবেদন করছেন,যাতে পুলিশ এবং প্রশাসনদ্রুত তার অবস্থান নির্ধারণকরতে পারে। এমনকিরাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও সহানুভূতিপ্রকাশ করা হয়েছে।অসমের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সামাজিক সংগঠনগুলোওহোসেনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তারদ্রুত খোঁজ পেতে প্রশাসনকেআরও তৎপর হওয়ার আহ্বানজানিয়েছে।