মুম্বাই, ০১ আগস্ট: ১৭,০০০ কোটি টাকার কথিত ঋণ জালিয়াতির তদন্তের অংশ হিসেবে রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনিল আম্বানিকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। একটি সূত্র অনুযায়ী, তাকে আগামী ৫ আগস্ট দিল্লির ইডি সদর দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন জায়গা এবং ব্যক্তিদের অফিসে ইডি তল্লাশি চালায়। এই তল্লাশির সময় মুম্বাই ও দিল্লির বিভিন্ন স্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি, হার্ড ড্রাইভ এবং অন্যান্য ডিজিটাল রেকর্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইয়েস ব্যাঙ্ক ঋণ জালিয়াতি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থপাচারের তদন্তের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার এই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছিল।
ইডি এবং সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) যৌথভাবে একটি বড় আকারের অর্থপাচার মামলার তদন্ত করছে। এই তদন্তে আর্থিক অনিয়ম, তহবিল স্থানান্তর এবং ঋণ জালিয়াতির মতো অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইডির মূল লক্ষ্য হলো, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া তহবিল শেল কোম্পানির মাধ্যমে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিনা। একই সময়ে, সিবিআই অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের অন্যান্য কোম্পানির বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে।
সিবিআইয়ের এফআইআর-এর ভিত্তিতে, ইডি প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট -এর অধীনে রিলায়েন্স গ্রুপ কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থপাচারের তদন্ত শুরু করে। ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাঙ্ক, সেবি, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদার মতো অন্যান্য সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানও ইডিকে এই সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করেছে।
ইডির প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে, ব্যাঙ্ক, শেয়ারহোল্ডার, বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ঠকিয়ে জনগণের টাকা সরিয়ে নেওয়ার একটি সুপরিকল্পিত ছক তৈরি করা হয়েছিল। ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রোমোটার-সহ অন্যান্য ব্যাঙ্ক কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার বিষয়টিও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গেছে যে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ বেআইনিভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ইডি দেখতে পেয়েছে যে, ঋণ অনুমোদনের ঠিক আগেই ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রোমোটারদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছিল। সংস্থাটি এখন ঘুষ এবং ঋণের এই যোগসূত্রটি খতিয়ে দেখছে।

