আঞ্চলিক আয়ুর্বেদ গবেষণা কেন্দ্রের অত্যাধুনিক আয়ুর্বেদিক হেলথ কিওস্ক মেশিনের উদ্বোধন

আগরতলা, ২৬ জুলাই : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুপ্রেরণায় সারাদেশে আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকের অন্তর্গত সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদিক সায়েন্সেস (সিসিআরএএস) আজ আগরতলার আঞ্চলিক আয়ুর্বেদ গবেষণা কেন্দ্র (আরএআরসি) একটি অত্যাধুনিক আয়ুর্বেদিক হেলথ কিওস্ক মেশিন উদ্বোধন করল।

এই স্বাস্থ্য কিওস্ক মেশিন দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সূচক নিরূপণ করবে, “স্বাস্থ্য মূল্যায়ন” (যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য বিচার করা হবে) এবং “অগ্নি মূল্যায়ন” (যা হজমশক্তি বা বিপাক ক্রিয়ার অবস্থা নির্ণয় করবে)। এছাড়াও, এটি ব্যবহারকারীর বয়স, ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) নির্ধারণ করবে, জল ও খনিজ উপাদানের ভারসাম্য মূল্যায়ন করে প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করবে।

সিসিআরএএস-এর এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই যন্ত্রটি আয়ুর্বেদের প্রাচীন মূল্যায়ন পদ্ধতিকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে মেলানোর এক উদ্যোগ। এটি সময়মতো স্বাস্থ্য তথ্য জানিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বনির্ভর করতে সহায়তা করবে এবং সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করবে।

এই উপলক্ষে সিসিআরএএস-এর মহাপরিচালক প্রফেসর (বৈদ্য) রবিনারায়ণ আচার্য আগরতলায় আরএআরসি পরিদর্শনে আসেন। তিনি চলমান গবেষণা, জনসচেতনতা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, আগতলার কেন্দ্রটি উপজাতি স্বাস্থ্য, ভেষজ গাছপালা সংরক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের লক্ষ্য আয়ুর্বেদকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ ও সহজলভ্য করে তোলা।

জানা গেছে, আগরতলার এই গবেষণা কেন্দ্রে প্রতিদিন ৪০-৫০ জন রোগী নিঃশুল্ক ওপিডি পরিষেবা গ্রহণ করেন। ২০১৯ সাল থেকে উপজাতি স্বাস্থ্য গবেষণা প্রকল্প (টিএইচসিআরপি-টওএসপি)-এর অধীনে স্বাস্থ্য শিবির এবং উপজাতি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতির দলিলীকরণ চলছে।

উত্তর-পূর্ব আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (এএইচসি-এনই) উদ্যোগের আওতায় ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলায় উপ-কেন্দ্রগুলি ওপিডি, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা (যেমন হিমোগ্লোবিন ও রক্তে সুগার পরীক্ষা) চালু করেছে।

২০২২ সাল থেকে কেন্দ্রটি জাতীয় ঔষধি উদ্ভিদ বোর্ড (এনএমপিবি)-এর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যার আওতায় ত্রিপুরা ও মিজোরামে ইতিমধ্যেই ৪১৬টি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা দাবি নথিভুক্ত হয়েছে এবং ৭৩৯টি উদ্ভিদ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে, আরএআরসি আগরতলা একটি পেরিফেরাল ফার্মাকোভিজিল্যান্স সেন্টার হিসেবে মনোনীত হয়েছে। যার দায়িত্ব ভ্রান্তিপূর্ণ বিজ্ঞাপন ও আয়ুর্বেদিক ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ।

আজকের অনুষ্ঠানে প্রফেসর আচার্য একটি স্বাস্থ্য কিওস্ক-ও উদ্বোধন করেন, যা বিএমআই, এসপিও২, রক্তচাপসহ একাধিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য তথ্য সহজে জানার সুযোগ করে দেবে। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় গবেষণা আধিকারিক ডা. দীপিকা তেওয়ারি মহাপরিচালককে স্বাগত জানান এবং কেন্দ্রের কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। ডা. বিমল তেওয়ারি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।