ধর্মনগর, ২৫ জুলাই : ধর্মনগর ডিগ্রি কলেজের ছাত্রাবাসে অস্থায়ীভাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রথম দিনের পাঠদান ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও বহুদিনের অপেক্ষার পর এই বিদ্যালয় চালু হওয়ায় আনন্দের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে শুরু থেকেই চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনার ছবি সামনে আসে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা শাসক চাঁদনী চন্দন, বাগবাসা বিধানসভার বিধায়ক যাদব লাল দেবনাথ, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ওএনজিসির ধর্মেন্দ্র মিশ্রা, নবনিযুক্ত প্রিন্সিপাল প্রণব সরকার, বিশিষ্ট সমাজসেবী রণজয় দেবনাথ সহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশুদের মাটিতে বসিয়ে, অভিভাবকদের দাঁড় করিয়ে এবং সাংবাদিকদের বসার কোনো ব্যবস্থাই না রাখায় ক্ষোভ দেখা দেয়। এত বড় অনুষ্ঠানে এমন অনিয়ম অনেককে হতাশ করে।
জেলাশাসক চাঁদনী চন্দন তাঁর ভাষণে বলেন, এই জেলায় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় চালু হওয়ায় তিনি আনন্দিত দীর্ঘদিন ধরে বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক যাদব লাল দেবনাথ উনার সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন তাছাড়া উনার সময়েই উত্তর জেলার বাগবাসাতে এই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য তিনি অনেক আনন্দিত এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ভবিষ্যতের তারাবিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। বিধায়ক যাদব লাল দেবনাথ বলেন, বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার কটুক্তি উপেক্ষা করে বাগবাসা কেন্দ্রে বিদ্যালয় স্থাপনে সফল হয়েছেন এবং এজন্য যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি জানান, নির্বাচনের আগে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, কলেজ ব্রিজ এবং রাস্তাঘাটের কাজ তিনি নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন করেছেন এবং আগামী দিনেও বাকিগুলি সম্পূর্ণ করবেন।
বর্তমানে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রণী পর্যন্ত মোট ১৪৩ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। আরও ৫৭ জনের ভর্তির সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ৪০ জন করে আসন ধার্য করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চারজন স্থায়ী শিক্ষক এবং একজন প্রিন্সিপাল নিয়োগ পেয়েছেন, তিনজন অস্থায়ী শিক্ষকও নিযুক্ত হয়েছেন।
যদিও বিদ্যালয়টি ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্রে স্থাপন সম্ভব হয়নি, তথাপি দীর্ঘদিন ধরে ধর্মনগরের বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁর অবদানও বিশেষভাবে স্মরণীয়।
ত্রিপুরা রাজ্যে চলতি বছরে দুটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা ছিল—একটি উদয়পুরে এবং অপরটি উত্তর জেলায়। যদিও উদয়পুরে বিদ্যালয় স্থাপিত হয়নি, উত্তর ত্রিপুরায় অবশেষে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় চালু হলো, যা এলাকার শিক্ষা পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করল।

