পুরী, ১৯ জুলাই : ওড়িশার পুরী জেলার বলাঙ্গা থানার অন্তর্গত এলাকায় শনিবার সকালে এক মর্মান্তিক ঘটনায় এক কিশোরীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। এই হামলায় ওই নাবালিকা গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। আহত কিশোরীকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে এআইআইএমএস, ভুবনেশ্বর-এ স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুরী জেলার পুলিশ সুপার পিনাক মিশ্র জানিয়েছেন, আজ সকালে বলাঙ্গা থানায় খবর আসে যে এক নাবালিকা কিশোরীকে কিছু ব্যক্তি আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাকে উদ্ধার করে এআইআইএমএস ওড়িশায় পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহত কিশোরীর এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, সে আমার বোনের মতো। আমরা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। গ্রামের কেউ এমন ঘটনার কথা ভাবতেই পারছে না। তিনি বলেন, ওই ছাত্রী তার এক বন্ধুর বাড়ি বই ফেরত দিতে যাচ্ছিল। তখনই তিনজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে নদীর ধারে টেনে নিয়ে গিয়ে অচেতন করে দেয় ও তার ওপর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জ্ঞান ফিরে আসার পর, সে বুঝতে পারে তার শরীরে আগুন লেগেছে এবং কোনওরকমে পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে সাহায্য চায়।
ঘটনার প্রায় আধ ঘণ্টা পর পরিবার ঘটনাটি জানতে পারে। তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে ভুবনেশ্বরের এআইআইএমএস-এ ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, কিশোরীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের বড় অংশ পুড়ে গিয়েছে। পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, আমরা ন্যায় চাই। প্রশাসনের উচিত দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। এমন ঘটনা যদি দিনে-দুপুরে ঘটে, তাহলে মেয়েরা আর নিরাপদ নয়।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক বি.এড. ছাত্রী ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনায় তার অভিযোগ ছিল কলেজের প্রধান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাজ্যজুড়ে এই দুই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভ ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
—

