স্মার্ট মিটার বাতিলের দাবিতে সরব ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসেসিয়েশন

আগরতলা, ১১ জুলাই: বিভিন্ন রাজ্যে কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনগুলি যৌথ উদ্যোগে “স্মার্ট মিটার বাতিল করা, বিদ্যুতের বেসরকারীকর বন্ধ করা সহ ৭-দফা দাবিতে সর্বভারতীয় ভিত্তিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচী গ্রহণ করেছে ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন। এরই অঙ্গ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যেও আন্দোলন সংগঠিত করা হচ্ছে। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসেসিয়েশন স্মার্ট মিটার বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসেসিয়েশন নেতৃত্ব জানান, বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অর্থ লুট করার যন্ত্র প্রিপেইড স্মার্ট মিটার বাতিল করার দাবিতে সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যেও ‘ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসেসিয়েশন’ আন্দোলন সংগঠিত করছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আদানী, টাটা, টেরেন্ট সহ বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থাকে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপর বোঝা চাপিয়ে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দিতেই এই স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে। টিএসইসিএল রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অসচেতনতা বা অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে ভয় দেখিয়ে, লাইন কেটে দেবার হুমকী দিয়ে, কোথাও চুপিসারে বাড়ির মালিকের অনুপস্থিতিতে জোড় করে স্মার্ট মিটার লাগিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গ্রাহকদের তীব্র আন্দোলন ও বিরোধীতার ফলে স্মার্ট মিটোর লাগনো আপাতত: স্থগিত হয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গ্রাহক আন্দোলনের চাপে স্মার্ট মিটার লাগানো বন্ধ করেছে। তাই এরাজ্যেও সরকার স্মার্ট মিটায় লাগনো বন্ধ করুক। এই দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে এসোসিয়েশন।

এদিন এসোসিয়েশনের নেতৃত্বরা আরো বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন সাবডিভিশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ, মেরামত সহ জরুরী পরিষেবা ট্রান্সফর্মারমেরামত, বিলিং সহ বিভিন্ন কাজ ইতিমধ্যেই বেসরকারী সংস্থার হাতে প্রদান করেছে। এইভাবেই “স্মার্ট মিটার চালু করে বিদ্যুৎ একটি পরিষেবা হিসাবে না রেখে বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে বেসরকারী মালিকদের হাতে তুলে দেবার পরিকল্পনা চলছে।

তাদের অভিযোগ, টিএসইসিএল ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত লাভজনক সংস্থা ছিল। পরিচালনাগত ত্রুটির জন্য এই সংস্থা ২০১৯-২০২০ অর্ধবর্ষ থেকে অলাভজনক সংস্থায় পরিনত হয়েছে। স্থায়ী মিটার রিডার এবং স্থায়ী লাইনম্যানগণ অবসর গ্রহণের পর এই পদগুলিতে নূতন নিয়োগ না করে এইসব কাজ আউটসোর্সিং, এর মাধ্যমে করানো হচ্ছে। ফলে গ্রামাঞ্চল সহ মফংসল শহরে নিয়মিত মিটার রিডিং নিয়ে গ্রাহকদের বিল দেওয়া হচ্ছে না এবং তাতে বিল বকেয়া পড়ছে।

এছাড়াও স্মার্ট মিটার না লাগানোর জন্য একটি আবেদনপত্র এবং যেখানে জোর করে লাগানো হয়েছে তাদের স্মার্ট মিটার খুলে নেবার জন্য একটি আবেদনপত্র তৈরী করে গ্রাহকদের মধ্যে বিলি করার উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার এসোসিয়েশন। সমস্ত গ্রাহকদের এই আবেদনপত্র নিয়ে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এসোসিয়েশন।