কংগ্রেস এমপি মনিকাম টাগোরের শশী থারুরকে আড়াল ভাবে তীব্র আক্রমণ: “পাখি কি তোতা হয়ে যাচ্ছে?”

নয়াদিল্লি, ১০ জুলাই : কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং তিরুভানন্তপুরমের এমপি শশী থারুর সম্প্রতি মালায়ালাম দৈনিক ‘দীপিকা’-তে একটি প্রবন্ধে জরুরি অবস্থা সম্পর্কিত তার মতামত প্রকাশ করেছেন। প্রবন্ধে, থারুর দাবি করেছেন যে, ভারতীয় ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে শুধু জরুরি অবস্থাকে স্মরণ করা উচিত নয়, বরং এর জটিলতা এবং শিক্ষাগুলি পুরোপুরি বোঝার প্রয়োজন। তবে এই প্রবন্ধের পর কংগ্রেস দলের আরেক এমপি মনিকাম টাগোর তার দলীয় সহকর্মী শশী থারুরের প্রতি এক আড়াল করা তীব্র মন্তব্য করেছেন, যা বিজেপির ন্যারেটিভের প্রতি থারুরের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

টাগোরের এই অপ্রত্যক্ষ আক্রমণ ছিল এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা এক সঙ্কেতমূলক বার্তায়, যেখানে তিনি লেখেন, “যখন একজন সহকর্মী বিজেপির লাইনের পুরোপুরি পুনরাবৃত্তি করতে শুরু করেন, তখন মনে হতে শুরু করে — পাখি কি তোতা হয়ে যাচ্ছে? পাখিদের মধ্যে মিমিক্রি কিউট, কিন্তু রাজনীতিতে নয়।” যদিও তিনি শশী থারুরের নাম নেননি, তার পোস্টের লক্ষ্য স্পষ্ট ছিল।

শশী থারুর তার প্রবন্ধে ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক জারি করা জরুরি অবস্থার সময়কালের অতিশয়তা এবং অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন। থারুর উল্লেখ করেছেন যে, যে ব্যবস্থা গুলি শৃঙ্খলা আনার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল, তা অনেক ক্ষেত্রেই নিষ্ঠুরতায় পরিণত হয়েছিল।

তিনি লিখেছেন, “ইন্দিরা গান্ধীর পুত্র সঞ্জয় গান্ধী জোর করে স্ত্রীরোগ নিরোধ অভিযান পরিচালনা করেন, যা এক অশুভ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দরিদ্র গ্রামীণ অঞ্চলে অযৌক্তিক লক্ষ্য পূরণের জন্য সহিংসতা ও বাধ্যবাধকতা ব্যবহার করা হয়েছিল। দিল্লির মতো শহরগুলোতে বস্তি নির্মূল করে দেয়া হয়েছিল, ফলে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। তাদের কল্যাণের কথা কোনোদিন ভাবা হয়নি।”

এছাড়াও, থারুর সতর্ক করেন যে, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ, মতভেদ দমন এবং সাংবিধানিক নিয়ন্ত্রণ উপেক্ষা করার প্রবণতা নতুনভাবে উঠে আসতে পারে। তিনি বলেন, “প্রায়ই, এসব প্রবণতাকে জাতীয় স্বার্থ বা স্থিতিশীলতার নামে justify করা হতে পারে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, জরুরি অবস্থা একটি শক্তিশালী সতর্কবার্তা হিসেবে দাঁড়ায়। গণতন্ত্রের রক্ষকরা সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।”

থারুরের এই মন্তব্যগুলো একটি গভীর আলোচনা এবং বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যেখানে জরুরি অবস্থার শর্ত এবং এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। অন্যদিকে, মনিকাম টাগোরের আক্রমণ দলের ভেতরে বিভিন্ন মতপার্থক্যের দিকে ইঙ্গিত করতে পারে, যেখানে কিছু নেতা থারুরের মতামতকে সমর্থন করছেন, আবার কিছু নেতা তার অবস্থান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।