হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে মেঘ ফেঁটে বৃষ্টিতে এক জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৯ জন

শিমলা, ১ জুলাই : হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার কারসোগ অঞ্চলে সোমবার রাতে একাধিক স্থানে মেঘ ফেঁটে বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রবল আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এই দুর্যোগে এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন জানা গেছে।

মেঘ ফেঁটে বৃষ্টিতে বহু বাড়ি জলের তোড়ে ভেসে গেছে। কুকলাহ এলাকায় অন্তত ১০টি বাড়ি এবং একটি সেতু ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গেছে। মান্ডি জেলায় অবস্থিত ১৬-মেগাওয়াটের পাতিকারি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। প্রকল্পটি বাখলি খাদের উপর নির্মিত, যা বিয়াস নদীর একটি বাম উপনদী। জেলা প্রশাসন ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) এখন পর্যন্ত অন্তত ৪১ জনকে উদ্ধার করেছে।

অতিবৃষ্টির কারণে পান্ডোহ ড্যাম থেকে ১.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বিয়াস নদীর উজান এলাকায় টানা বৃষ্টির ফলে পান্ডোহ ড্যামে জলপ্রবাহ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের নদীর ধারে না যাওয়ার জন্য কড়াভাবে সতর্ক করা হয়েছে। কুল্লু জেলার ১২৬-মেগাওয়াট লারজি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও জলের প্রবাহ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মান্ডির জেলা শাসক অপূর্ব দেবগণ মঙ্গলবার জেলার সব স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুরো রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় একাধিক অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। একদিন আগেই শিমলা শহরের উপকণ্ঠে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়ে। যদিও বাসিন্দারা আগেই ভবনটি ছেড়ে দেওয়ায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। হিমাচল প্রদেশে গত ১০ দিনে টানা বর্ষণের ফলে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫.৬৯ কোটি টাকা। রাজস্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ক্লাউডবার্স্ট, ফ্ল্যাশ ফ্লাড, ও ডুবে যাওয়ার ঘটনায় মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের ২৫৯টি সংযোগ সড়ক, ৬১৪টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার এবং ১৪৪টি জল সরবরাহ প্রকল্প বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।