নির্মীয়মাণ নেশা মুক্তি কেন্দ্র থেকে রড-সিমেন্ট চুরি: আটক ২

বিশ্রামগঞ্জ, ৩০ জুন: বিশ্রামগঞ্জে নির্মীয়মাণ সরকারি নেশা মুক্তি কেন্দ্র থেকে রড, সিমেন্ট ও পাথর চুরির অভিযোগে দীর্ঘ তিন মাস পর দুই মূল অভিযুক্তকে আটক করেছে বিশ্রামগঞ্জ থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে বিশ্রামগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুই ভাই রাজ্যের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলো পঙ্কজ দাস এবং তার কাকাতো ভাই তাপস দাস। তাদের বাড়ি মেলাঘরের পালপাড়া এলাকায়। সিপাহীজলা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অফিস কমপ্লেক্সের পেছনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল ২০০ শয্যাবিশিষ্ট এই সরকারি নেশা মুক্তি কেন্দ্রের।

তিন মাস আগে এই কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সরকারি ঠিকাদার স্বপন চন্দ্র দে এই কাজের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মেলাঘরের পঙ্কজ দাসকে সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। অভিযোগ, এই পঙ্কজ দাসই শ্যাম স্টিল কোম্পানির ১০ টন রড, ২৫০ বস্তা স্টার সিমেন্ট এবং ৬০০ ফুট পাথর চুরি করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। চুরির মাল দিয়ে তারা একটি বিশাল বড় বিল্ডিং তৈরি করছিল।

ঠিকাদার স্বপন চন্দ্র দে-র সন্দেহ হলে এবং পুলিশের তৎপরতায় পঙ্কজের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এর প্রেক্ষিতে ঠিকাদার স্বপন চন্দ্র দে তিন মাস আগে বিশ্রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকেই পঙ্কজ দাস ও তাপস দাস পলাতক ছিল।

তারা প্রথমে অতিরিক্ত সেশন কোর্টে জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর উচ্চ আদালতেও তাদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। মামলা হওয়ার পরপরই বিশ্রামগঞ্জ থানা এবং মেলাঘর থানা পুলিশ পঙ্কজ দাস ও তাপস দাসের বাড়ি থেকে ৮ হাজার ৮০০ কেজি রড এবং ৪০০ ফুট পাথর উদ্ধার করে। তবে সিমেন্টগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিশ্রামগঞ্জ থানার ওসি সুবিমল দেবনাথের নেতৃত্বে সোমবার দুপুরে পুলিশ বিশ্রামগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে হানা দেয়। সেখানেই রাজ্যের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে পঙ্কজ দাস ও তাপস দাসকে আটক করা হয়।

বিশ্রমগঞ্জ থানার ওসি সুবিমল দেবনাথ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ধৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে বিশালগড় মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত এবং সরকারি জিনিসগুলো কোথায় বিক্রি করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে দিল, আইনের হাত থেকে সাময়িকভাবে পালিয়ে বাঁচা গেলেও বেশিদিন পালিয়ে থাকা যায় না। আইনের হাত অনেক লম্বা, এবং একদিন না একদিন আইনের জালে ধরা পড়তেই হয়। তিন মাস পালিয়ে থাকার পর অবশেষে পুলিশের হাতে আটক হওয়ায় সরকারি ঠিকাদার স্বপন চন্দ্র দে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।