বোড়োল্যান্ডে খেলাধুলার জয়গান ‘মন কি বাত’-এ, সিইএম টুর্নামেন্টকে ঐক্যের প্রতীক বললেন প্রধানমন্ত্রী

নয়াদিল্লি/গুয়াহাটি, ২৯ জুন : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার ‘মন কি বাত’-এর ১২৩তম পর্বে বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়নে (বিটিআর) ক্রীড়া চর্চা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রশংসা করেন। তিনি ‘বোড়োল্যান্ড সিইএম টুর্নামেন্ট’-কে “ঐক্য ও আশার প্রতীক” বলে অভিহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ বোড়োল্যান্ড এক নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করছে। এখানকার যুবসমাজের আত্মবিশ্বাস ফুটবল মাঠে বিশেষভাবে দৃশ্যমান। বোড়োল্যান্ডে আয়োজিত সিইএম টুর্নামেন্ট শুধুই একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি একটি উৎসব, যা ঐক্য, সহযোগিতা এবং আশার বার্তা বহন করে।”

বিভিন্ন স্তরে—গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা ও কাউন্সিল স্তরে—এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়, যাতে স্থানীয় জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ সম্ভব হয়। এই উদ্যোগ বোড়োল্যান্ড ফুটবল একাডেমির মতো প্রশিক্ষণমূলক কাঠামো ও দুরান্ড কাপের মতো জাতীয় স্তরের আসরে বোড়োল্যান্ড এফসির অংশগ্রহণের সঙ্গে মিলিয়ে এক বৃহৎ ক্রীড়া আন্দোলনের দিশা দেখাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে ৩,৭০০-রও বেশি দল এবং প্রায় ৭০,০০০ খেলোয়াড়, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, “এই পরিসংখ্যানগুলোই বোঝায়, বোড়োল্যান্ডে কী বিশাল সামাজিক পরিবর্তন ঘটছে। এই অঞ্চল আজ দেশের ক্রীড়া মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে।”

তিনি জাতীয় পর্যায়ে সাফল্য পাওয়া খেলোয়াড়দের নাম উল্লেখ করে বলেন—“হালিচরণ নার্জারি, দুর্গা বোরো, অপূর্ব নার্জারি ও মানবীর বসুমতরী—তাঁরা শুধু প্রতিভাবান ফুটবলার নন, বরং বোড়োল্যান্ডের নতুন প্রজন্মের মুখ, যারা অঞ্চলটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।”

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রশংসা করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “বোড়োল্যান্ডে এক সময় যে সিইএম টুর্নামেন্ট কল্পনাও করা যেত না, তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে সঠিক নেতৃত্ব ও যুবশক্তিকে সঠিক পথে পরিচালনার মাধ্যমে।”

তিনি আরও বলেন, “গত পাঁচ বছরে বিটিআর যে রূপান্তরের সাক্ষী হয়েছে—সন্ত্রাস থেকে শান্তির পথে যে যাত্রা তা প্রধানমন্ত্রীর উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রতি দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।”

এছাড়া শনিবার বোড়ো নেতা বীর চিলাগাং বসুমতরীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিটিসি প্রধান প্রমোদ বোরো ঘোষণা করেন, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি করে আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে, যা বসুমতরীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হবে।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসন্ন বিটিসি নির্বাচনে বিজেপি ও ইউপিপিএল পৃথকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বোড়োল্যান্ডে ক্রীড়া ও শান্তির জয়যাত্রা আগামী দিনের রাজনীতিতে একটি নতুন দিশা দেখাবে।