নয়াদিল্লি, ২৪ জুন : ভারত সরকার বৈদ্যুতিক যাত্রীবাহী গাড়ি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে একটি বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ভারী শিল্প মন্ত্রক ঘোষণা করেছে যে, ভারতে ইলেকট্রিক প্যাসেঞ্জার কার তৈরির প্রচারের পরিকল্পনার (এসপিএমইপিসিআই) আওতায় আবেদনপত্র গ্রহণের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে যোগ্য আবেদনকারীরা ২৪ জুন ২০২৫ সকাল ১০:৩০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন প্রক্রিয়া ২১ অক্টোবর ২০২৫ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চালু থাকবে। আবেদন করা যাবে: pmepci.heavyindustries.gov.in-এ।
এই স্কিমের মাধ্যমে বৈশ্বিক বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের কাছে ভারতের বাজারে বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত হলো। প্রকল্পটি প্রথম ঘোষিত হয়েছিল ১৫ মার্চ ২০২৪-এ এবং বিস্তারিত দিকনির্দেশিকা প্রকাশিত হয় ২ জুন ২০২৫-এ। এটি ভারতকে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী এইচ.ডি. কুমারস্বামী পোর্টাল উদ্বোধনের সময় বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বে এই প্রকল্প আমাদের পরিবেশবান্ধব ও আত্মনির্ভর গতিশীলতার ভবিষ্যতের পথে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
এসপিএমইপিসিআই প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত কোম্পানিগুলোকে বৈদ্যুতিক গাড়ির সম্পূর্ণ নির্মিত ইউনিট আমদানির ক্ষেত্রে ১৫% হারে হ্রাসকৃত শুল্কে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে, যদি সেই গাড়িগুলোর CIF মূল্য ন্যূনতম ৩৫,০০০ মার্কিন ডলার হয়। এই ছাড় ৫ বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে আবেদনকারীদের প্রকল্পে ন্যূনতম ₹৪,১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু আন্তর্জাতিক বিনিয়োগই নয়, দেশীয় উৎপাদনেও উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
এই স্কিমটি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মানভর ভারত’-এর মূল স্তম্ভকে মজবুত করতে ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রযুক্তিতে আন্তর্জাতিক উৎকর্ষতা ও দেশীয় মূল্য সংযোজনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। প্রকল্পটি স্পষ্টভাবে দেশীয় উৎপাদন ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের লক্ষ্যে ‘দেশীয় মূল্য সংযোজন’-এর মতো শর্ত সংযুক্ত করেছে, যা দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেশীয় সক্ষমতাকে জোরদার করবে।
ভারতের পরিবেশ সচেতনতা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প এক মাইলফলক হয়ে উঠবে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক ও দেশীয় কোম্পানিগুলো ভারতের গ্রিন মবিলিটি বিপ্লবে সক্রিয় অংশীদার হতে পারবে। এই স্কিমের আওতায় তৈরি সুবিধাজনক নীতিগত পরিকাঠামো, আর্থিক প্রণোদনা এবং স্পষ্ট দিকনির্দেশনা আগামী দিনে ভারতকে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের বিশ্বনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করবে।

