নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ২২ জুন: চুরাইবাড়িতে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ নেশাকারবারী ধরা পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল। স্থানীয় দুই বুথ সভাপতিকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক দল বিজেপির মন্ডল সদস্য শঙ্কর সাহানির বিরুদ্ধে। ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৫ই জুন রবিবার সকালে আসাম থেকে ত্রিপুরায় প্রবেশের সময় চুরাইবাড়ি থানার পুলিশের হাতে আটক হয় সঞ্জয় সাহানি (২৪), পিতা সুধন সাহানি। ধৃত যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৮০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট। সঞ্জয়ের বাড়ি পূর্ব ফুলবাড়ি ৪নং ওয়ার্ডে রেল গুদাম সংলগ্ন এলাকায়। পুলিশ ইতিমধ্যে এম ডি পি এস আইনে মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে, অভিযুক্ত সঞ্জয় সাহানির গ্রেপ্তারের জেরে হুমকির মুখে পড়েন ৪৯নং বুথ সভাপতি রাহুল দত্ত (৪৪) ও ৪৮নং বুথের প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন গোস্বামী। অভিযোগ, শঙ্কর সাহানি নামক এক যুবক — যিনি ধৃত সঞ্জয়ের খুড়তুতো ভাই ও বিজেপির ৫৪নং কদমতলা-কুর্তি মন্ডলের সদস্য — তাদের গুলি করে মারার হুমকি দেয়। কারণ, রাহুল ও সৌমেন নাকি পুলিশের কাছে সঞ্জয় সাহানির মাদক কারবার সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করেছিলেন।
শঙ্করের হুমকির পর আতঙ্কিত হয়ে শনিবার রাত আটটার দিকে রাহুল ও সৌমেন চুরাইবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, সৌমেন গোস্বামী স্থানীয় ‘ফ্রেন্ডস ক্লাব’-এর সভাপতি হওয়ায় শতাধিক যুবক থানায় উপস্থিত হয়ে শঙ্করের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
চুরাইবাড়ি থানার ওসি খোকন সাহা অভিযোগকারীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনার জেরে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী “নেশা মুক্ত ত্রিপুরা” গড়ার ডাক দিয়েছেন এবং পুলিশ প্রশাসন সক্রিয়ভাবে তা বাস্তবায়নের কাজ করছে, তখন কীভাবে শাসক দলের একজন মন্ডল সদস্য প্রকাশ্যে মাদক কারবারীদের আড়াল করতে পারে?
শঙ্কর সাহানি শুধু হুমকি দিয়েই থেমে থাকেননি, বরং লোকালয়ে প্রকাশ্যে বলছেন — “যারা কিছু বলবে, তাদের গুলি করে মারব।”এ ধরনের প্রকাশ্য হুমকি ও দলীয় কর্মীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই ঘটনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও দ্রুত পদক্ষেপের ওপরই নির্ভর করছে আইনশৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থা। এলাকাবাসী এখন তাকিয়ে পুলিশের দিকেই— কতটা দ্রুত এবং কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয় এই মন্ডল সদস্যের বিরুদ্ধে।

