আইজল, ২২ জুন: দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ এইচআইভি সংক্রমণের হার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মিজোরামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লালরিনপুই। রাজ্যে ২.৭৩ শতাংশ সংক্রমণের হারকে “অত্যন্ত উদ্বেগজনক” উল্লেখ করে তিনি বুধবার আইজলে মিজোরাম স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি (এমএসএসিএস)-এর গভর্নিং বডির বৈঠকে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেন। মন্ত্রী বলেন, “আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে আরও শক্তিশালী হস্তক্ষেপ জরুরি।”
এমএসএসিএস-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডাঃ জেন রিনজুসলি রালতে বৈঠকে জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্যের ১৪টি অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) কেন্দ্রে নতুন করে ২,০৬৯ জন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী নথিভুক্ত হয়েছেন। আশার কথা, চিকিৎসাধীন ৯৭.৭ শতাংশ রোগীর ভাইরাল লোড দমন করা সম্ভব হয়েছে, যার অর্থ তারা এখন ভাইরাস ছড়াতে অক্ষম।
তবে, গত পাঁচ বছরে নতুন সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি এখনও সন্তোষজনক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইনজেকশন ড্রাগের জন্য ব্যবহৃত সুচ ও সিরিঞ্জের ভাগাভাগিই মিজোরামে এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান কারণ, যা জাতীয় গড়ের তুলনায় দশগুণ বেশি। এছাড়া, অরক্ষিত যৌন সম্পর্ক, সচেতনতার অভাব এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কারণও সংক্রমণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।
সংক্রমণ মোকাবিলায় এমএসএসিএস গত বছর রাজ্যের ১১টি জেলায় ডি-অ্যাডিকশন সেন্টার স্থাপন করেছে। পাশাপাশি, সচেতনতামূলক প্রচার এবং এইচআইভি পরীক্ষা-চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। এইডস-এ মৃতদের স্মরণে ক্যান্ডেললাইট ভিজিলও অনুষ্ঠিত হয়।
ডাঃ রালতে আরও জানান, মিজোরাম স্টেট ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিল (এমএসবিটিসি) ‘এক্সেলেন্স ইন ব্লাড ডোনেশন ২০২৩-২৪’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে তাদের সেরা পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি।
এছাড়াও, জাতীয় মান নিরীক্ষা (এমকিউএএস)-এ মিজোরামের আটটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র দেশের সেরা হাসপাতালের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কাওনপুই (৯১.৪২%), পাংজাউই (৯৬.২৬%), ছিংছিপ (৯৩.৮০%), হ্রাংচালকাউন (৯৩.৮০%), লুংসেন (৮৮.২২%), চেরলুন (৮৯.৬৬%), সাঙ্গাউ (৮৯.০৩%) এবং ছুয়ারলুং (৯৫.৩০%)-এর বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী লালরিনপুই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “সমন্বিত ও টেকসই পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। রাজ্যবাসী এবং সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতায় আমরা এইচআইভি মুক্ত মিজোরাম গড়তে বদ্ধপরিকর।”
2025-06-22

