ত্রিপুরায় গণ বণ্টনের ডাল সরবরাহে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ

আগরতলা, ২১ জুন : ত্রিপুরায় গণ বণ্টনের ডাল সরবরাহে বড়সড় দুর্নীতি।অভিযুক্ত মহাবীর ডাল মিলস প্রাইভেট লিমিটেড। ত্রিপুরা রাজ্যের গণবণ্টনের ডাল সরবরাহে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য সরকারের টেন্ডারপ্রাপ্ত সংস্থা মহাবীর ডাল মিলস প্রাইভেট লিমিটেড–এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ৩০ কেজির বস্তায় কম ওজনের ডাল সরবরাহ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর মহকুমার চুরাইবাড়ি ফুড গোডাউনে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, এনএল০১কিউ০১০৯ নম্বরের একটি ট্রাকে করে গণবণ্টনের জন্য ডাল আসে চুরাইবাড়ি ফুড গোডাউনে। গোডাউনের লেবাররা বস্তাগুলি আনলোড করার সময় সন্দেহ হলে ওজন করে দেখা যায়, ৩০ কেজির প্রতিটি বস্তার পরিবর্তে কিছু বস্তায় রয়েছে মাত্র ২৫ থেকে ২৬ কেজি ডাল।

লেবার সর্দার বিব্রত দেব জানান, এত বড় পরিমাণে কম ওজনের ডালের বস্তা এর আগে কখনো দেখেননি। তাঁর দাবি, ডালের বস্তাগুলি এসেছে জিরানিয়া থেকে, যা কদমতলা ব্লক এলাকার ৩৩টি রেশন দোকান ও আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত ছিল। তাঁর ভাষায়, “গাড়িতে থাকা ৮৩৪টি বস্তার মধ্যে প্রায় ৩০ কুইন্টাল ডাল কম রয়েছে। এমনকি কিছু বস্তা খোলার পরে আবার নতুন করে সেলাই করার চিহ্নও দেখা গেছে।”গাড়ি চালকের বক্তব্য গাড়ির চালক চিরঞ্জিত সরকার বলেন, “মহাবীর ডাল মিলস-এর অনিয়মের কারণে চালকদেরও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।” তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ জানান, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

স্টোর কিপারের প্রতিক্রিয়া চুরাইবাড়ি ফুড গোডাউনের স্টোর কিপার অচিন্ত্য পাল জানান, “৮৩৪টি বস্তায় মোট ২৫ মেট্রিকটন ২০ কেজি ডাল এসেছে, যার প্রায় অর্ধেক বস্তাতেই ডাল কম ছিল।বিল প্রস্তুতের সময় যত কেজি ডাল কম পাব, ততটাই উল্লেখ করব। এটি একটি বড় ধরনের গাফলা। অবিলম্বে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন, “যদি লেবাররা সতর্কতা না দেখাতেন, তাহলে এই দুর্নীতি ধরা পড়ত না।”
তাদের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মহাবীর ডাল মিলস প্রাইভেট লিমিটেড সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক এবং আইন অনুযায়ী কড়া শাস্তি দেওয়া হোক।

ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর ও মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাধারণ মানুষ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন—এমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে গণবণ্টন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারাবে জনগণ।