২০ ও ২১ জুন বিহার, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী, শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প

নয়াদিল্লি, ১৯ জুন : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০ ও ২১ জুন বিহার, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ সফরে থাকবেন। এই সফরের শুরুতে তিনি ২০ জুন বিহারের সিওয়ান সফরে গিয়ে দুপুর ১২টায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। সিওয়ানে তিনি নতুন বৈশালী–দেওরিয়া রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন এবং এই রুটে নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু করবেন। একইসঙ্গে পাটলিপুত্র থেকে গোরখপুর পর্যন্ত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করবেন, যা মুজফ্ফরপুর ও বেতিয়া হয়ে চলবে। মরহৌড়া প্ল্যান্টে তৈরি অত্যাধুনিক ইঞ্জিন, যা গিনি প্রজাতন্ত্রে রপ্তানির জন্য নির্মিত, সেটিও তিনি পতাকা নেড়ে ছাড়বেন—এই প্রথম এই কারখানা থেকে রপ্তানিযোগ্য লোকোমোটিভ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নমামি গঙ্গে প্রকল্পের আওতায় ছয়টি সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট -এর উদ্বোধন করবেন, যার মোট ব্যয় ১৮০০ কোটি টাকার বেশি। সেই সঙ্গে তিনি জল সরবরাহ, স্যানিটেশন ও STP প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন, যার মোট মূল্য ৩,০০০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫০০ MWh ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম -এরও শিলান্যাস করা হবে, যা মুজফ্ফরপুর, সিওয়ান, বেতিয়া-সহ ১৫টি সাবস্টেশনে বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রী বিহারে PMAY-U প্রকল্পের আওতায় ৫৩,৬০০ উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির অর্থ প্রদান করবেন এবং ৬,৬০০ সম্পূর্ণ ঘরের গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

পরবর্তীতে ২০ জুন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ভুবনেশ্বর সফরে যাবেন, যেখানে তিনি ওড়িশা সরকারের এক বছরের সাফল্য উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। তিনি রাজ্যে মোট ১৮,৬০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে পানীয় জল, সেচ, কৃষি পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, গ্রামীণ রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, জাতীয় সড়ক এবং নতুন রেলপথ নির্মাণ। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তিনি বৌধ জেলায় প্রথমবারের মতো রেল সংযোগের সূচনা করবেন। এছাড়া, তিনি ১০০টি বৈদ্যুতিক বাস চালু করবেন যা রাজ্যের পরিবেশবান্ধব শহর পরিবহণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। প্রধানমন্ত্রী ওড়িশার জন্য ‘ওড়িশা ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশ করবেন, যা ২০৩৬ (ওড়িশার ১০০ বছর) ও ২০৪৭ (ভারতের স্বাধীনতার শতবর্ষ) কে কেন্দ্র করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরবে। একই সঙ্গে তিনি ‘বারপুত্র ঐতিহ্য গ্রাম যোজনা’-র উদ্বোধন করবেন, যা ওড়িশার বিশিষ্ট কৃতীদের জন্মস্থানকে ঐতিহ্য গ্রামে রূপান্তর করার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের ১৬.৫ লক্ষ ‘লক্ষপতি দিদি’-র প্রতিনিধিত্বকারী কিছু মহিলাকে সংবর্ধিতও করবেন।

২১ জুন, আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে জাতীয় উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি সমুদ্রতটবর্তী যোগা মঞ্চে প্রায় ৫ লক্ষ অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে Common Yoga Protocol সেশনে অংশ নেবেন। দেশের ৩.৫ লক্ষেরও বেশি স্থানে একযোগে যোগা সঙ্গম অনুষ্ঠিত হবে। এবছরের আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের থিম “এক পৃথিবী, এক স্বাস্থ্যের জন্য যোগ”, যা ব্যক্তি ও পরিবেশের সুস্থতার মধ্যে পারস্পরিক সংহতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সাল থেকে নয়াদিল্লি, চণ্ডীগড়, লখনউ, মাইসুরু, শ্রীনগর ও নিউ ইয়র্ক (জাতিসংঘ সদর দপ্তর)-সহ বিভিন্ন শহরে এই দিবসের উদ্‌যাপনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন এবং এটি বর্তমানে এক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এই বছর MyGov ও MyBharat-এর মাধ্যমে “পরিবারের সাথে যোগ”, “যোগ আনপ্লাগড” প্রভৃতি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যুবসমাজ ও পরিবারের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা হয়েছে।

এই সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, নারী ক্ষমতায়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং জনস্বাস্থ্য সচেতনতা—এই সব ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিকসিত ভারতের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবেন।