দেশজুড়ে ৫০ লাখের বেশি অসংগঠিত শ্রমিক উপকৃত: শ্রম মন্ত্রণালয়ের কল্যাণমূলক প্রকল্পে এক যুগের সাফল্য

নতুন দিল্লি, ১৭ জুন : ভারতের অসংগঠিত শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আজ বাস্তবে ৫০ লক্ষেরও বেশি শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রম কল্যাণ মহাপরিচালক পরিচালিত এই প্রকল্পগুলি বিশেষ করে বিড়ি শিল্প, সিনেমা শিল্প এবং খনি খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণে নিবেদিত। দেশজুড়ে ১৮টি আঞ্চলিক কল্যাণ কমিশনারের মাধ্যমে শ্রম কল্যাণ সংস্থা এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করছে। মূলত সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষায় আর্থিক সহায়তা এবং আবাসনের সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে এই কর্মসূচিগুলি গৃহীত হয়েছে।

এই প্রকল্পগুলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল শিক্ষা সহায়তা প্রকল্প, যার মাধ্যমে বিড়ি, সিনেমা ও অ-কয়লা খনিশ্রমিকদের সন্তানদের বছরে ₹১,০০০ থেকে ₹২৫,০০০ পর্যন্ত বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রতি বছর এই প্রকল্পে এক লক্ষেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে এবং ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালের মাধ্যমে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার পদ্ধতিতে অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ ও দ্রুততর করে তুলেছে।

স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও এই প্রকল্পগুলি বড় ভূমিকা রাখছে। জাতীয় ডিসপেনসারি নেটওয়ার্ক থেকে আউটডোর চিকিৎসা এবং গুরুতর রোগের জন্য অর্থ ফেরতের সুবিধা দেওয়া হয়। হৃদরোগ, কিডনি প্রতিস্থাপন, ক্যান্সার, যক্ষ্মা এবং ছোট অস্ত্রোপচারের মতো চিকিৎসার জন্য ₹৩০,০০০ থেকে শুরু করে ₹৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। এতে করে নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা এখন অনেক বেশি সুলভ হয়েছে।

২০১৬ সালে চালু হওয়া পুনর্গঠিত ইন্টিগ্রেটেড হাউজিং স্কিম বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে সরকার পূর্ববর্তী উপভোক্তাদের প্রতিও দায়বদ্ধতা পালন করছে এবং ৩১ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত তাঁদের বকেয়া কিস্তি প্রদান করেছে। এটি সরকারের “সবার জন্য সম্মানজনক আবাসন” নীতির একটি স্পষ্ট প্রতিফলন।

এই প্রকল্পগুলি শুধুমাত্র আর্থিক বা সামাজিক সহায়তা প্রদান করছে না, বরং দেশের অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য ক্ষমতায়নের পথ খুলে দিচ্ছে। গত ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে শ্রম কল্যাণ ব্যবস্থায় যে গঠনমূলক সংস্কার আনা হয়েছে, তা একদিকে যেমন কর্মজীবী মানুষদের মর্যাদা দিয়েছে, তেমনি উন্নয়নের মূলস্রোতে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। ভবিষ্যতে এই কল্যাণ কাঠামোকে আরও বেশি প্রযুক্তিনির্ভর, সহজপ্রাপ্য ও ফলমুখী করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক।