গ্যাংটক/নয়াদিল্লি, ১৪ জুন: পাঁচ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শুরু হলো বহু প্রতীক্ষিত কৈলাশ মানসরোবর যাত্রা, এবার সিকিমের নাথুলা পাস পথ ধরে। শুক্রবার প্রথম দফার ৩৪ জন তীর্থযাত্রী পৌঁছেছেন গ্যাংটকে, যাদের সাদরে স্বাগত জানিয়েছে সিকিম প্রশাসন। পূর্ণ ভক্তি ও আধ্যাত্মিক আবেগে ভরপুর এই যাত্রা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে যেমন তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি ভারত-চীন সাংস্কৃতিক কূটনীতির ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
২০২৫ সালের যাত্রার সূচনা এদিন সকালে দু’টি পৃথক অনুষ্ঠানে হয়—নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু ভবন এবং গাজিয়াবাদের কৈলাশ মানসরোবর যাত্রা ভবন থেকে। নয়াদিল্লিতে পতাকা ওড়ান বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পবিত্র মার্ঘেরিটা, যিনি চীনা সরকারের সহযোগিতার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “এই আধ্যাত্মিক তাৎপর্যময় যাত্রা পুনরায় শুরু করতে সাহায্য করায় আমরা চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
গাজিয়াবাদ থেকে যাত্রার সূচনা ছিল পূর্ণ ধর্মীয় আবহে। “হর হর মহাদেব” ধ্বনির মধ্যে ৩৯ জন তীর্থযাত্রী, যার মধ্যে ছিলেন দুইজন সরকার নিযুক্ত সংযোগ আধিকারিক, যাত্রা শুরু করেন। যদিও শুরুতে ৪৬ জনের নাম নিবন্ধিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যগত কারণে কয়েকজন শেষ মুহূর্তে যাত্রা থেকে সরে দাঁড়ান বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
ইন্দিরাপুরম-এ উত্তরপ্রদেশের পর্যটন ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী জয়বীর সিংহ ঐতিহ্যবাহী শৈবীয় রীতিতে পাঠান অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেখানে ডমরু, মৃদঙ্গ, তুরহি ও ঢোলকের আওয়াজে আয়োজন করা হয় এক পূজো-অনুষ্ঠানের, যা যাত্রার আধ্যাত্মিক মহিমা আরও বাড়িয়ে তোলে।
অন্যদিকে, গ্যাংটকে প্রথম দফার তীর্থযাত্রীদের বরণ করে নেয় সিকিম প্রশাসন। উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাসের তুলনায় নাথুলা পথটি শারীরিকভাবে তুলনামূলক সহজ এবং চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা। এই পথে তীর্থযাত্রীরা তিব্বতে অবস্থিত কৈলাশ পর্বত এবং মানসরোবর হ্রদ দর্শনের সুযোগ পাবেন।
এই পুনরায় শুরুর মাধ্যমে যেমন ভক্তদের মধ্যে নতুন করে আধ্যাত্মিক উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই তীর্থপর্যটন শিল্প ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এটি এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, নাথুলা পাস পথ ধরে এই যাত্রা ভবিষ্যতে আরও তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণ করবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতার বার্তা বহন করবে।

