‘ভারতের রক্ত সন্ত্রাসে ঝরার নয়’: সন্ত্রাস দমনে মোদীর কড়া অবস্থানকে কৃতিত্ব দিলেন অমিত শাহ, বললেন — যোগী রাজেই আধুনিক হয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ

লখনউ, ১৫ জুন: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশে নবনিযুক্ত ৬০,২৪৪ জন কনস্টেবলের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন। এই উপলক্ষে রাজ্যস্তরীয় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহ জানান, এই নিয়োগে জাতপাত, সুপারিশ বা ঘুষের কোনও স্থান ছিল না। পুরো প্রক্রিয়াটি হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে।

শাহ বলেন, “আগে পুলিশে নিয়োগ হতো জাতি ভিত্তিতে। কিন্তু আজ প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছ নিয়োগ সম্ভব হয়েছে। আজ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে রয়েছে সিসিটিভি, কন্ট্রোল রুম, কমান্ড সেন্টার, পিসিআর ওয়ান এবং ১৫০টিরও বেশি ফরেনসিক ল্যাব ইউনিট। এই ব্যবস্থা আপনাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

নবনিযুক্ত কনস্টেবলদের উদ্দেশে শাহ আরও বলেন, “আজকের দিনটা আপনাদের জীবনের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আজ ৬০,০০০-রও বেশি যুবক-যুবতী, যাঁরা রাজ্যের প্রতিটি জেলা, মহকুমা, জাতি ও সম্প্রদায় থেকে এসেছেন, ভারতের বৃহত্তম পুলিশ বাহিনীর অংশ হতে চলেছেন।”

উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলার আগের পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০১৭-এর আগে রাজ্যে অপরাধ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। কিন্তু বিজেপি সরকার আসার পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে রাজ্যের পুলিশ ব্যবস্থা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।”

তিনি জানান, ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত রাজ্যে পুলিশের আধুনিকীকরণের কোনও চিহ্ন ছিল না। কিন্তু ২০১৭ সালের পর চিত্রটা বদলেছে। “নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গোটা দেশে পুলিশের আধুনিকীকরণ শুরু হলেও উত্তরপ্রদেশে তা শুরু হয়েছে যোগী রাজেই,” বলেন অমিত শাহ।

তিনি আরও জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধি, প্রমাণ আইন এবং নাগরিক প্রতিরক্ষা আইনে বড়সড় সংস্কার আনা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “আগামী পাঁচ বছরে দেশে এমন অবস্থা তৈরি হবে, যেখানে একজন নাগরিকের এফআইআরের পর তিন বছরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব হবে।”

অনুষ্ঠানে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও ব্রজেশ পাঠক, বিজেপি রাজ্য সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরী এবং নবনিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৩, ২৪, ২৫, ৩০ ও ৩১ আগস্ট রাজ্যের ৬৭টি জেলায় ১,১৭৪টি কেন্দ্রে এই বিশাল নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছিল। পরীক্ষাটি ছিল ভারতের অন্যতম বৃহৎ, স্বচ্ছ এবং প্রযুক্তিনির্ভর নিয়োগ প্রক্রিয়া।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এক্স-এ এক নির্বাচিত প্রার্থীর ভিডিও শেয়ার করে লেখে, “৬০,০০০ স্বপ্নের মধ্যে এক কণ্ঠস্বর। প্রতিটি নবনিযুক্ত কনস্টেবলের পেছনে রয়েছে মেধা, সংকল্প ও এক স্বচ্ছ পরীক্ষার গল্প।”

গত আট বছরে উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৮.৫ লক্ষ মানুষকে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।