হায়দ্রাবাদ, ৩ জুন : এমবিবিএস ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্থানীয় কোটার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া একাধিক ছাত্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে তেলেঙ্গানা সরকারকে নোটিশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি পি কে মিশ্র ও বিচারপতি এ জি মাসিহের বেঞ্চ এই নোটিশ ইস্যু করেন এবং আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারের জবাব চেয়েছেন।
সোমবার ২ জুন মামলার শুনানিতে ছাত্রদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী গৌতম নারায়ণ দাবি করেন, এ বছরের নিট-ইউজি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আটজন ছাত্রছাত্রী তেলেঙ্গানায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের একটি নতুন নিয়মের কারণে ‘স্থানীয় কোটার’ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এই নিয়ম অনুযায়ী, কেবলমাত্র যারা নিট পরীক্ষার পূর্ববর্তী চার বছর ধরে টানা তেলেঙ্গানায় পড়াশোনা করেছে, তারাই ‘স্থানীয়’ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে যারা প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তেলেঙ্গানায় পড়াশোনা করেছে কিন্তু একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি বাইরে অন্য রাজ্যে করেছে, তাদের এই কোটার বাইরে রাখা হয়েছে।
আইনজীবী গৌতম নারায়ণ আরও জানান, এই নিয়মটি সেই সময়ে কার্যকর হয় যখন একাডেমিক বছর ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং তখন অনেক ছাত্রছাত্রী ইতোমধ্যে অন্যান্য রাজ্যের ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এর ফলে তেলেঙ্গানার স্থানীয় ছাত্রছাত্রীরা সুযোগ হারাচ্ছেন, অথচ অন্যান্য রাজ্যের যারা তেলেঙ্গানায় মাত্র চার বছর পড়াশোনা করেছে, তারা ৮৫ শতাংশ স্থানীয় কোটা পেতে পারছে।
বিচারপতি মিশ্র পরামর্শ দেন, মামলাটি উচ্চ আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে। তবে, আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, যেহেতু মামলাটি ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই হাইকোর্ট এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তিনি আরও অনুরোধ করেন, ছাত্রদের যেন ১৪ জুন নিট-ইউজি ফল প্রকাশের পর শুরু হওয়া কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, বিচারপতি মিশ্র রাজ্য সরকারকে নোটিশ জারি করেন এবং জানান, যদি কোনও জরুরি পরিস্থিতি দেখা দেয়, তবে মামলাটি গ্রীষ্মকালীন অবকাশ বেঞ্চের সামনে তোলা যেতে পারে। এই মামলায় প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রীরাম, রাজ্যের ‘স্থানীয় কোটার’ নিয়ম ‘সত্যিকারের ভূমিপুত্রদের’ ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মন্তব্য করেন। উত্তরে বিচারপতি মিশ্র হালকা সুরে বলেন, “এই ভূমিপুত্ররাই কিন্তু অন্য জমিতে পাড়ি দিয়েছেন।” তেলেঙ্গানা সরকারের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী এল নারসিমহা রেড্ডি, জান্ধ্যালা রবিশঙ্কর ও শ্রবণ কুমার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

