মণিপুরে ভয়াবহ বন্যা: ৩,৮০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, ৮৮৩টি ঘরবাড়ি ধ্বংস, সেনা উদ্ধার করেছে শত শত মানুষকে

ইমফল, ১ জুন: প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মণিপুরে গত ৪৮ ঘণ্টায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৩,৮০২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ৮৮৩টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইমফল পূর্ব জেলা, যেখানে রাজ্য রাজধানী ইমফলের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলি সম্পূর্ণভাবে জলের নিচে তলিয়ে গেছে।

ইমফল ও ইরিল নদী-সহ একাধিক নদীর পানি উপচে পড়ায় খুরাই, হেইংগাং ও চেকন-এর মতো এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, “গত ৪৮ ঘণ্টায় বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং শত শত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ভারতীয় সেনা ও আসাম রাইফেলস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যেই ৮০০ জনের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। রাজ্যজুড়ে ১২টি ভূমিধসের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২ জন আহত এবং ৬৪টি গৃহপালিত পশু মারা গেছে।

রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লা, মুখ্যসচিব পি.কে. সিং-সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাংলা নংপক থং, লাইরিকিয়েংবাম লেইকাই এবং সিংজামেই ব্রিজ-এর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। রাজভবন সূত্র জানিয়েছে, রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নদীর জলস্তরের ওপর নজরদারি বজায় রাখার এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

বন্যার কারণে অল ইন্ডিয়া রেডিও ইমফল ও জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস -এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলির কাজ ব্যাহত হয়েছে।

যদিও রবিবার সকাল নাগাদ চেকন ও ওয়াংখেই এলাকায় কিছুটা জল নামতে শুরু করে, তবে খুরাই ও হেইংগাং-এর পরিস্থিতি এখনও গুরুতর।

প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত ও বাসিন্দাদের সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।