গুয়াহাটি, ২৮ মে: সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর সন্দেহভাজন বিদেশি হিসেবে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে ‘অমানবিক আচরণ’ এবং আইনবিরুদ্ধ কার্যকলাপের অভিযোগ নিয়ে আসাম রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর ১১ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল।
এআইইউডিএফ-র দাবি, সীমান্ত এলাকা থেকে ধৃতদের অনেকের বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও, কেবল সন্দেহের বশে তাদের আটক করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
মানকাচর কেন্দ্রের এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, “যাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এটা শুধুমাত্র বেআইনি নয়, বরং অমানবিক। সরকার বিচার প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলেছে।”
তিনি জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, ফলে তাদের এইভাবে গ্রেপ্তার করা আইনসম্মত নয়। “যদি সরকার মনে করে কেউ বাংলাদেশি, তাহলে কূটনৈতিক স্তরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যাচাই করে উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাদের ফেরত পাঠানো উচিত,” বলেন আমিনুল।
এছাড়াও, তিনি শাসক বিজেপির কড়া সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ইস্যুটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার শঙ্কর জ্যোতি বড়ুয়া ও শ্রিংখল চলিহার মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো থেকে নজর ঘোরাতে এই কৌশল নিচ্ছে।”
এআইইউডিএফ-র অপর বিধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করি না। ১৯৭১ সালের পরে যারা ভারতে প্রবেশ করেছে, তাদের ফেরত পাঠানোর পক্ষে আমরা। তবে সেটি হওয়া উচিত প্রমাণের ভিত্তিতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়।” তিনি আরও জানান, দলের সঙ্গে শ্রিংখল চলিহার কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের কাছে দাবি জানায়, সন্দেহভাজন বিদেশিদের সঙ্গে আচরণে যেন মানবাধিকার রক্ষা ও আইনি প্রক্রিয়া বজায় রাখা হয়।
সাক্ষাৎ শেষে এক স্মারকলিপিতে প্রতিনিধিদল জানায়, “আমরা সংবিধানের উপর পূর্ণ আস্থা রাখি। আমাদের আবেদন একটাই—ন্যায়বিচার হোক, এবং কোনও নিরীহ নাগরিক যেন অযথা ভোগান্তির শিকার না হন।”

