বাহরাইন, ২৫ মে : বাহরাইনে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে এক আলোচনায় অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন -এর সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “ভারত সরকার আমাদের এখানে পাঠিয়েছে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে যে, বিগত বহু বছর ধরে ভারত কী ধরনের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসবাদের কারণে।”
এই অল-পার্টি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পাণ্ডা। তার সঙ্গে রয়েছেন নিশিকান্ত দুবে, ফ্যাংনন কোন্যাক, রেখা শর্মা (বিজেপি), আসাদউদ্দিন ওয়াইসি , সৎনাম সিং সন্দ্ধু, গুলাম নবী আজাদ এবং রাষ্ট্রদূত হর্ষ শ্রিংলা।
ওয়াইসি বলেন, “দুঃখজনকভাবে আমরা অনেক নিরপরাধ প্রাণ হারিয়েছি। এই সমস্যার মূল উৎস হচ্ছে পাকিস্তান। যতদিন না পাকিস্তান এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য, প্রশ্রয় এবং পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া বন্ধ করছে, ততদিন এই সমস্যা দূর হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, পাকিস্তান যদি আবারও এই ধরণের দুঃসাহস দেখায়, তাহলে তার ফলাফল তাদের কল্পনার বাইরে হবে।”
তিনি ২২ এপ্রিল পাহেলগাম হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের মানবিক ট্র্যাজেডি নিয়ে একটু ভাবুন। এক নারী যিনি বিয়ের ছয় দিনের মাথায় বিধবা হয়েছেন। আরেকজন দুই মাস আগে বিয়ে করে এখন স্বামীহারা।”
বাহরাইনে বক্তৃতার সময় ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়েও ওয়াইসি বলেন, “ভারতের কাছে সবরকম ব্যবস্থা আছে—প্রযুক্তি, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সামরিক শক্তি—যা ভারতের প্রতিটি নাগরিক এবং ভারতে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম।”
তিনি বলেন, “আমাদের সরকার, মিডিয়া, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—সব একসঙ্গে কাজ করছে। পাকিস্তানের মতো একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র যা লঞ্চ করেছিল, তা আমাদের প্রযুক্তি সফলভাবে প্রতিহত করেছে।”
ওয়াইসি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসের অর্থ জোগান বন্ধে সমবেত প্রচেষ্টার ডাক দেন এবং বাহরাইন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা পাকিস্তানকে আবারও FATF-এর গ্রে লিস্টে ফেরানোর ক্ষেত্রে ভারতের পাশে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা সবাই এক। এখন সময় এসেছে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান এই বিষয়টি বুঝুক।”
ভারতের প্রতিনিধি দল সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন ও আলজেরিয়ায় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এবং পাহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের অবস্থান ও সীমান্ত পেরিয়ে আসা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কৌশল সম্পর্কে অবহিত করবে।
এই সফরের মাধ্যমে ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে সঠিক তথ্য প্রচার এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি তুলে ধরতে চায়।

