তুরস্কের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, পাকিস্তানকে সমর্থন দেওয়ায় ভারতে বয়কটের ডাক, অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়তে পারে আঙ্কারা

নয়াদিল্লি, ১৫ মে: ২০২৩ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ‘অপারেশন দোস্ত’-এর মাধ্যমে যাকে মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছিল ভারত, সেই তুরস্ক এখন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরোধিতা করছে। সম্প্রতি ‘অপারেশন সিন্ধূর’-এর সময় পাকিস্তানকে সামরিক সহায়তা পাঠানোয় তুরস্ককে ঘিরে ভারতজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, সমুদ্রপথ ও ‘হারকিউলিস’ বিমানের মাধ্যমে পাকিস্তানে অস্ত্র ও সহায়তা পাঠিয়েছে তুরস্ক। শুধু তুরস্ক নয়, আজারবাইজানও পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ভারতের জনগণ ও ব্যবসায়ী মহল তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

ভারতজুড়ে ‘বয়কট তুরস্ক’ ট্রেন্ড করছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারতের বিভিন্ন শহরে তুর্কি পণ্যের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক উঠেছে। ভারতের ব্যবসায়ীরা তুরস্ক থেকে আমদানি করা আপেলের বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। সাহিবাবাদ, উদয়পুর ও পুনের ফল ও মার্বেল ব্যবসায়ীরা তুর্কি পণ্য আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি স্থগিত করেছে। এখন থেকে তুর্কি ভাষা পড়ানোও বন্ধ করা হচ্ছে। জনপ্রিয় ট্র্যাভেল পোর্টাল ‘মেক মাই ট্রিপ’-এর মতে, তুরস্ক ও আজারবাইজানে ট্রিপ বুকিং ৬০% হ্রাস পেয়েছে।

২০২৪ সালে ৩.৩ লক্ষ ভারতীয় তুরস্ক ভ্রমণে গিয়েছিলেন এবং আনুমানিক $৩৫০–৪০০ মিলিয়ন খরচ করেছিলেন। ভারত থেকে পর্যটক না গেলে তুরস্কের পর্যটন খাতে বড় ধাক্কা লাগবে। তুরস্কের মুদ্রা ‘লিরা’ বিগত কিছু বছর ধরে চরম অবমূল্যনের শিকার হয়েছে। ভারতের মতো বড় বাজার যদি তাদের পর্যটন, ফল, মার্বেল ও অন্যান্য পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে এর ফলাফল তুরস্কের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক হতে পারে।

‘হিমালয়ান অ্যাপল গ্রোয়ার্স সোসাইটি’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে তুরস্ক থেকে আপেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি, তুর্কি আপেলের কারণে হিমাচল, কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ডের আপেল চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। ‘অপারেশন সিন্ধূর’-এর সময় তুরস্ক পাকিস্তানকে ড্রোন, যুদ্ধজাহাজ ও অস্ত্র পাঠিয়ে ব্যাপক সামরিক সাহায্য করেছে। এমনকি আরব সাগরে নেভাল শিপও মোতায়েন করেছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তুরস্কের এই ভূমিকার জবাবে এখন ভারত তার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও বয়কটের পথে হাঁটছে।