অকাল বৃষ্টি ও শীতল আবহাওয়ায় তামিলনাড়ুতে বিদ্যুৎ চাহিদায় হঠাৎ পতন

আগরতলা, ১৩ মে : অকাল বৃষ্টি ও আচমকা ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে তামিলনাড়ুতে গত কয়েক দিনে বিদ্যুৎ চাহিদায় লক্ষণীয় হ্রাস দেখা দিয়েছে। সাধারণত গ্রীষ্মকালে রাজ্যে বিদ্যুৎ চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে, কিন্তু এবছর মে মাসে সেই প্রবণতায় ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।

তামিলনাড়ু জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কর্পোরেশন(টিজেএডিসিও)-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঘরোয়া ও বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীরা ফ্যান, এসি এবং কুলার কম ব্যবহার করছেন। ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে এবং রাজ্যের সামগ্রিক বিদ্যুৎ চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

প্রতিবছর এই সময়ে, মে মাসে তীব্র গরমের কারণে তামিলনাড়ুতে বিদ্যুৎ চাহিদা ১৭,০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু চলতি বছর অকাল বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে পরিবেশ অনেকটাই ঠান্ডা রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাত ও সকালবেলা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে, যার ফলে ঠান্ডা যন্ত্রপাতির ব্যবহার আরও কমেছে।

টিজেএডিসিও-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিদিনের বিদ্যুৎ ব্যবহারে ১,০০০ থেকে ১,৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত কমে গেছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, যেখানে রাজ্যে এই সময়ে ১৭,০০০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকার কথা, সেখানে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫,৫০০ মেগাওয়াটে।

বিদ্যুৎ চাহিদায় এই আকস্মিক পতনে রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উপর চাপ কমেছে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির, বিশেষ করে বায়ু ও সৌর বিদ্যুতের, উপর নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। দক্ষিণ তামিলনাড়ুতে বায়ু প্রবাহ অনুকূলে থাকায় টিজেএডিসিও এখন বায়ু শক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে।

বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন শীতল আবহাওয়া কিছুদিন বজায় থাকলে জ্বালানি খরচ কমবে এবং শক্তি ব্যবস্থাপনার দক্ষতাও বাড়বে। তবে তাঁরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, আগামী দিনে তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুৎ চাহিদা আবারও বেড়ে যেতে পারে।

সব মিলিয়ে, এই অকাল বৃষ্টি ও মনোরম আবহাওয়া তামিলনাড়ুর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উপর সাময়িক স্বস্তি এনে দিয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহার কমার ফলে যেমন পরিবেশ উপকৃত হচ্ছে, তেমনি বিদ্যুৎ সরবরাহ নেটওয়ার্কের উপর চাপও অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।