চণ্ডীগড়, ১৩ মে : অমৃতসরের একটি গ্রামে বিষাক্ত দেশি মদ পান করে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন শ্রমিকের। স্থানীয়ভাবে তৈরি ওই মদ পান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের তড়িঘড়ি করে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা অনেককেই বাঁচাতে পারেননি।
এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। ইতিমধ্যেই অবৈধ মদ তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বড় পরিমাণ ভেজাল মদ জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মদের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবেও পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, ওই মদে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ছিল, যা শ্রমিকদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
ঘটনার পর স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা গ্রামটি পরিদর্শন করেছেন। মৃতদের পরিবার ও চিকিৎসাধীন রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। অনেকেই এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে গ্রামে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশকে অবৈধ মদ ব্যবসায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রামের মানুষের মধ্যে এই ঘটনার পর চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই অবৈধ মদের রমরমা চলছে। অনেকে জানান, বহুদিন ধরেই প্রকাশ্যে এইসব মদ বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। সমাজকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরাও অবিলম্বে কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি তুলেছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পুরো রাজ্যে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পাশের এলাকাগুলিতেও ভেজাল মদ রুখতে অভিযান চালানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে, কোথাও অবৈধ মদ বিক্রির খবর থাকলে প্রশাসনকে জানাতে।
এই ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, লাইসেন্সবিহীন ও ভেজাল মদের ঝুঁকি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখে দেওয়া। মৃতদের পরিবার এখন ন্যায়বিচার ও সরকারের সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছেন।

