আগরতলা, ২১ এপ্রিল :
ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে রাজ্য জুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ত্রিপুরার অন্যতম প্রধান উৎসব গরিয়া পূজা। এই উপলক্ষে আগরতলা পুর নিগমের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে সোমবার জনগণের মধ্যে রিসা ও পাছরা বিতরণ করলেন রাজ্যের মেয়র ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিধায়ক দীপক মজুমদার।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র বলেন, “গরিয়া এখন আর কেবলমাত্র জনজাতি অংশের দেবতা নন। তিনি এখন সর্বজনীন দেবতা হয়ে উঠেছেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষ এই পূজায় অংশ নিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “আগে এই পূজা শুধুমাত্র উপজাতি এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন আগরতলা শহরসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ক্লাব ও সেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি গরিয়া পূজা আয়োজন করছে।”
মেয়র দীপক মজুমদার গরিয়া পূজার শুভলগ্নে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং রাজ্যের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বাবা গরিয়ার আশীর্বাদ কামনা করেন।
এদিকে, গরিয়া পূজাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের উপজাতি অংশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পারিবারিক ও সার্বজনীনভাবে উদযাপিত হচ্ছে এই পূজা।
গরিয়া পূজা ত্রিপুরার উপজাতি সমাজের একটি প্রাণবন্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ উৎসব। বৈশাখ মাসের সপ্তমী তিথিতে পালিত এই উৎসব সাত দিন ও সাত রাত ধরে চলে। চৈত্র মাসের শেষ দিন থেকে শুরু হওয়া এই পূজায় ভগবান গরিয়াকে উৎসর্গ করা হয় বাঁশের খুঁটি, যা গৃহ, পশুপালন ও সম্পদের দেবতার প্রতীক হিসেবে পূজিত হয়।
উৎসবের সময় রিচ্চা, সুতির সুতো, ডিম, মুরগির বাচ্চা, চাল, দেশি মদ ও মাটির হাঁড়ি সহ নানা উপকরণ দিয়ে পূজার আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। পূজার মূল পুরোহিত ওচাই মন্ত্রপাঠ ও বলিপ্রথা সম্পন্ন করেন এবং নৈবেদ্যর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বার্তা দেন।
গরিয়া পূজা রাজ্যের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সম্প্রদায়িক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠেছে। এই উৎসবের মাধ্যমে একত্রিত হয় ত্রিপুরার জনগণের বিশ্বাস ও ভক্তি।

