আগরতলা, ১৪ এপ্রিল: সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের আদর্শকে অনুসরণ করেই রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। তাঁর আদর্শকে পাথেয় করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সার্বিক কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আজ সকালে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের স্টেট মিউজিয়াম প্রাঙ্গণে আয়োজিত ড. বি আর আম্বেদকরের ১৩৫ তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, ড. আম্বেদকর ছিলেন একজন পন্ডিত, দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংবিধান আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন। নিপীড়িত মানুষের জন্যে তিনি যেভাবে কাজ করেছেন, লড়াই করেছেন তা আজও সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর শিক্ষা, মেধা, বাগ্মিতার জন্য তিনি ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে বড় হয়ে তিনি আজীবন ঘৃণা এবং বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাঁর এই লড়াইকে আজও সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র জন্মবার্ষিকী পালনের মধ্যদিয়েই ড. বি আর আম্বেদকরকে শ্রদ্ধা জানালে চলবে না, তিনি যে পথ আমাদের দেখিয়ে গেছেন তা অনুসরণ করে আজকের ছাত্রছাত্রীদের বড় হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ড. বি আর আম্বেদকরের দেখানো পথকে অনুসরণ করে রাজ্যের বর্তমান সরকার মানুষের সার্বিক কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ২০২৩ সালে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসাবে বিধানসভা ভবনের সামনে ড. বি আর আম্বেদকরের পুর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। তপশিলি জাতি গোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা যাতে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রি-মেট্রিক, পোস্ট মেট্রিক স্কলারশিপ সহ বিভিন্ন বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণে তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, ড. বি আর আম্বেদকর এক নতুন ভারত গড়তে চেয়েছিলেন, যেখানে থাকবেনা অস্পৃশ্যতা, ঘৃণা ও বৈষম্য। সর্বত্র বিরাজ করবে ন্যায় ও সমতা। এজন্যই তিনি দেশবাসীর জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংবিধান উপহার দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. বি আর আম্বেদকরের চিন্তাধারা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষের প্রতিনিধি রামনাথ কোবিন্দকে এবং জনজাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি দৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদে আসীন করা হয়েছে। তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী বর্তমান ছাত্র সমাজকে ড. বি আর আম্বেদকরের আদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার। অনুষ্ঠানে শিল্পীগণ ভজন ও সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার, অধিকর্তা জয়ন্ত দে, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা অধিকর্তা তপন কুমার দাস প্রমুখ।