বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য
রাজ্যে “ডাবল ইঞ্জিন” সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি দপ্তরগুলিতে অনিয়মের পরিমাণ বাড়ছে। কিছু নেতা রাতারাতি বড়লোক হয়ে একাধিক গাড়ির মালিক হয়ে উঠছেন, আর এসব গাড়িগুলি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের নাম করে সরকারি দপ্তরে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা রাজ্যের প্রতিটি মহকুমাতেই ঘটছে।
ধর্মনগরের এক নেতার বেসরকারি তিনটি গাড়ি রাজ্য সরকারের তিনটি দপ্তরে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। একদিকে, বাণিজ্যিক কাজের জন্য ক্রয় করা গাড়িগুলি দাঁড়িয়ে থাকলেও, অন্যদিকে সরকারি দপ্তরগুলিতে ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে কাজ চলছে। অনেক বেকার যুবক গাড়ি ক্রয় করেছে কর্মসংস্থানের জন্য, কিন্তু তারা কোনওভাবে আয় করতে পারছে না। ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোকেও প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের প্রিমিয়াম দিতে হচ্ছে, কিন্তু গাড়িগুলির থেকে কোনও আয় হচ্ছেনা।
এছাড়া, অভিযোগ রয়েছে যে সরকারি অফিস যেমন পুর পরিষদ, নগর পঞ্চায়েত, সিডিপিও অফিস, বিদ্যুৎ নিগম, মহকুমা শাসক অফিস থেকে শুরু করে মহাকরণ পর্যন্ত ব্যক্তিগত যানবাহন ভাড়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, হলুদ নম্বর প্লেটযুক্ত গাড়িগুলি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হওয়া উচিত, কিন্তু সরকারি অফিসের কিছু অসাধু আমলা সেই নিয়ম ভেঙে ব্যক্তিগত যানবাহন ভাড়া নিচ্ছে।
এই অনিয়মের কারণে বাণিজ্যিক গাড়ির মালিক এবং চালকদের ক্ষতি হচ্ছে। অনেক বাণিজ্যিক গাড়ির মালিকরা গাড়ি ক্রয় করার পরেও তা কোনও সরকারি অফিসে দিতে পারছেন না, অথচ ব্যক্তিগত গাড়িগুলি দিব্যি সরকারি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাণিজ্যিক গাড়ির মালিকদের অভিযোগ, তাদের ইনশিয়োরেন্স, ফিটনেস পারমিট এবং অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুত করতে প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে, কিন্তু তাও তারা সেই গাড়িগুলি ব্যবহার করতে পারছেন না।
অন্যদিকে, অনেক সরকারি এবং বেসরকারি বিদ্যালয়ে ব্যক্তিগত, অর্থাৎ সাদা নম্বর প্লেট গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসনের কোনও নজর নেই। এই সব সমস্যার কারণে বাণিজ্যিক গাড়ির মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে যাচ্ছে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে।