কলকাতা, ১১ মার্চ (হি.স.): অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম দাবি তুলেছে, অরুণাচল সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতা অধিনিয়ম ১৯৭৮-এর নিয়ম এবং ধারাগুলি অবিলম্বে প্রণয়ন করুক।
মঙ্গলবার কলকাতায় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের অখিল ভারতীয় সভাপতি সত্যেন্দ্র সিং ও সহ-সভাপতি তেচি গুবিন এ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন— লোভ-লালসা, প্রতারণা এবং ভীতি প্রদর্শন করে ধর্মান্তরকরণ রোধ করার জন্য কঠোরভাবে এই প্রয়োগ প্রয়োজন।
সত্যেন্দ্র সিং বলেন, স্থানীয় স্ব-ধার্মিক জনজাতিদের ধর্মীয় সংস্কৃতি রক্ষা করতে এবং লোভ-লালসা বা প্রতারণার কারণে ধর্মান্তরিতকরণ রোধ করতে তৎকালীন জনতা পার্টি সরকার ১৯৭৮ সালে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন পাস করেছিল। দুর্ভাগ্যবশত, নিয়ম এখনও তৈরি না হওয়ার কারণে, আইনটি গত ৪৭ বছর ধরে বাস্তবায়িত হয়নি। যার জন্য ২০১১ সাল নাগাদ রাজ্যে খ্রিস্টান জনসংখ্যা বেড়ে ৩১% হয়েছে যা এই আইন হওয়ার আগে ছিল মাত্র এক শতাংশ।
গুয়াহাটি হাইকোর্টের ইটানগর স্থায়ী বেঞ্চ, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক জনহিতকর যাচিকায় আদেশ দেওয়ার সময়, অরুণাচল প্রদেশ সরকারকে ছয় মাসের মধ্যে এই আইন কার্যকরী নিয়মগুলিকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সত্যেন্দ্র সিং বলেন যে এই সময়কাল যত ঘনিয়ে আসছে, চার্চ এবং তাদের অনুপ্রাণিত সংগঠনগুলি আদালতের আদেশ এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টার বিরোধিতা শুরু করেছে। অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রচেষ্টা ও বিরোধিতার নিন্দা জানায়।
সত্যেন্দ্র সিং ধর্মান্তকরনের গুরুতর পরিণতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে এই পঞ্চাশ বছরে, সনাতনের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার ধর্ম এবং সংস্কৃতিকে গ্রাস করেছে – অরুণাচল প্রদেশের স্ব-ধার্মিক জনজাতি সম্প্রদায় ধর্মান্তকরণের শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, পনেরো লক্ষ জনসংখ্যার এই ছোট রাজ্যে, দুই বিশপ এবং হাজার হাজার চার্চ দ্বারা অনুপ্রাণিত মানুষ আজ হাইকোর্টের আদেশ এবং এটি মেনে সরকার কর্তৃক বিধি প্রণয়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। দেশের গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও এ বিষয়ে চোখ বন্ধ ও নীরব থাকার অভিযোগ করেছেন।
অরুণাচল প্রদেশের পূর্ববর্তী রাজ্য সরকারগুলি এই বিষয়ে চরম অবহেলা করেছে। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে অরুণাচল প্রদেশ সরকারের অবিলম্বে এই নিয়মগুলি ঘোষণা করা উচিত এবং এই আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত, এই সাংবাদিক সম্মেলনে অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম দাবি করেছে।
এই সীমান্তবর্তী সংবেদনশীল রাজ্যের দেশপ্রেমিক স্ব-ধার্মিক জনজাতিদের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করতে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।