আগরতলা, ১০ মার্চ: ধর্মনগর মহকুমার অন্তর্গত হাফলংছড়া কৃষি কার্যালয় প্রাঙ্গণে মন্ত্রী রতনলাল নাথের হাতল উদ্বোধন হলো ‘মধুবনের মধু’। এটি একটি নতুন ব্র্যান্ড। যাতে ৩২ জন উদ্যমী যুবক-যুবতী ও গৃহিণীদের যৌথ প্রচেষ্টায় আত্মপ্রকাশ করেছেন।
এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুবরাজনগর ব্লকের বিডিও দেবপ্রিয়া দাস, প্রাক্তন বিধায়ক মলিনা দেবনাথ, কৃষি দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সবাই মিলে এই নতুন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, আমাদের সরকারের লক্ষ্য হলো প্রতিটি মানুষকে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এই ৩২ জন উদ্যোগী মানুষকে, যারা কৃষি দপ্তরের সহায়তায় ‘মধুবনের মধু’ ব্র্যান্ডটি গড়ে তুলেছেন।”
তিনি আরও বলেন, উত্তর ত্রিপুরায় ধান চাষের পরিমাণ ক্রমশ কমে আসছে, অথচ এখানকার মানুষের খাদ্য চাহিদা দ্বিগুণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি নীতি অনুযায়ী, উত্তর জেলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ হাজারের বেশি কৃষককে সম্মানিত করা হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত চাষাবাদ না হওয়ার ফলে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
মন্ত্রী এদিন কৃষকদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন, “যেসব কৃষক এখনও পর্যন্ত পাওয়ার টিলার বা অন্যান্য কৃষি যন্ত্র পাননি, তাদের কাছে এবার সমস্ত আধুনিক কৃষি সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে কৃষিজমি কোনোভাবেই খালি রাখা যাবে না—কিছু না কিছু চাষ করতেই হবে।” বক্তব্যের শেষে তিনি এক কৃষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করেন, যিনি বছরের পর বছর প্রখর রোদ কিংবা বৃষ্টির মধ্যেও চাষাবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। মধুবনের মধু’ ব্র্যান্ডের উদ্বোধনের পর মন্ত্রী রতনলাল নাথ ঘোষণা করেন, “এই উদ্যোগ যাতে আরও প্রসারিত হয়, তার জন্য ধর্মনগর শহরে একটি স্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্র (স্টল) গড়ে তোলা হবে। এতে উদ্যোক্তারা তাদের মধু বাজারজাত করতে পারবেন এবং স্বনির্ভরতার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, “মধুর চাহিদা সর্বদাই থাকে, কারণ এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। আমি অন্যান্য কৃষকদেরও উৎসাহিত করব যাতে তারা কোনো না কোনো ফসল উৎপাদন করেন এবং কৃষিক্ষেত্রে আরও উন্নতি ঘটান।”
এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে উত্তর ত্রিপুরার অর্থনীতিতে কৃষিভিত্তিক শিল্পের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো, যা ভবিষ্যতে আরও বহু মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।