বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য
আগরতলা, ৮ মার্চ : কুমারঘাটে বল্লভভাই প্যাটেল অবরুদ্ধ। সন্ধ্যার পর ঘোর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে থাকছে দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চরমপন্থী নেতা ছিলেন বল্লভ ভাই প্যাটেল। দেশ স্বাধীনতার পর উনিই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর কৃপা না থাকার কারণে তিনি প্রধান মন্ত্রী হতে পারেননি। গান্ধী পরিবারের বিপরীত স্রোতে তোলার কারণে বল্লভ ভাই প্যাটেল এমন গুরুত্ব পায়নি বলে বিজেপি দলের অভিযোগ। ২০১৪ সালে দিল্লিতে বিজিপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বল্লভ ভাই প্যাটেল এর গুরুত্ব বেড়ে যায়। গুজরাটে বল্লভ ভাই প্যাটেলের আকাশচুম্বী মর্মর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পিছিয়ে নেই এই ত্রিপুরা রাজ্যও। রাজ্য সরকার কর্তৃক এ রাজ্যেও বল্লভ ভাই প্যাটেলের মর্মর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই মুতাবেক কুমারঘাট শহরের হালাইমুড়া দুই নদীর সংযোগস্থলে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করে বল্লভ ভাই প্যাটেলের মর্মর মূর্তি বসানো হয়।
ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লি থেকে বিশেষ যানবাহনের মাধ্যমে কুমারঘাটে বল্লভ ভাই প্যাটেলের পাথরের মূর্তি আনা হয়। মহকুমা প্রশাসনের পরিচালনায় মহাধুমধামে বল্লভ ভাই প্যাটেলের পাথরের মূর্তি বসানো হয়। মূলত প্রাক্তন মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ভগবান দাসের হাত ধরে ৩১ অক্টোবর 2022 সালে এই মূর্তি বসানো হয়। উদ্বোধনের পর প্রথম কয়েক মাস বল্লভ ভাইকে নিয়ে অনেক দৌড়ঝাপ করা হয়। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে বল্লব ভাই প্যাটেল গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে।
বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে কুমারঘাট দেও নদীর পাড়ে বল্লভ ভাই প্যাটেল প্রায় অযত্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সূর্য ডোবার সাথে সাথে বল্লভ ভাই প্যাটেল এর মর্মর মূর্তিটিও অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। কেননা সেখানে কোন লাইটের ব্যবস্থাও করা হয়নি। সন্ধ্যার পর এই এলাকা সমাজদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে। অযত্ন এবং অবহেলায় মর্মর মূর্তির বেসমেন্ট এর বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে নিচে পড়ে গেছে। কেউ কোন খোঁজ খবর রাখছে না। এর মধ্যে হালাইমুড়া এলাকায় পানীয় জলের একটি ট্রিটম্যান প্ল্যান্টের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্ল্যান্টের কাজ করতে গিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ বল্লভ ভাই প্যাটেলের কে দেখার সুযোগ পাচ্ছে না। বলা যায় সম্পূর্ণ ভাবে অবহেলা শিকার হয়েছে কুমারঘাটে অবস্থিত বল্লভ ভাই প্যাটেলের বসানো মূর্তি। এই ব্যাপারে কুমারঘাট পৌর পরিষদ এবং কুমারঘাট মহকুমা প্রশাসনকে দায়ী করছে কুমারঘাটবাসি।