৮ মার্চ থেকে মণিপুরে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ অমিত শাহের

নয়াদিল্লি, ১ মাৰ্চ (হি.স.) : আগামী ৮ মার্চ থেকে মণিপুরে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কৰ্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহ।

আজ শনিবার নৰ্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী অমিত শাহের পৌরোহিত্যে মণিপুরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লা, কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর অধিকর্তা তপনকুমার ডেকা, উপ-সেনাপ্ৰধান, ইস্টার্ন কমান্ড আৰ্মি কমান্ডার, সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)-র ডিরেক্টর, কেন্দ্ৰীয় রিজাৰ্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর ডিরেক্টর জিপি সিং, মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, আসাম রাইফেলস-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকগণ, অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তা এবং মণিপুরের শীর্ষ আমলাগণ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে গত ২০২৩ সালের মে মাস থেকে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে নৃশংস জাতিগত সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে, তার সমাধান করে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আজ নিরাপত্তা সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে সকলের বক্তব্য শুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ আগামী ৮ মার্চ থেকে রাজ্যের সর্বত্র, বিশেষ করে সকল রাস্তাঘাটে মানুষের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়া বৈঠকে আরও যে সব মূল নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন সেগুলি যথাক্রমে –

১। সব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ।

২। আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর নির্ধারিত প্রবেশপথগুলিতে বেড়া দেওয়ার কাজ ত্বরান্বিত করা।

৩। মণিপুরকে মাদকমুক্ত করতে মাদক-নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা ইত্যাদি।

বৈঠকে সহিংসতা কবলিত রাজ্যে শান্তি পুনরুদ্ধার এবং বিদ্রোহ তথা জঙ্গিপনা রোধ, সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ, সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়ে সুনির্দিষ্ট আরও কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি এন বীরেন সিং মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এর পর ২০ ফেব্রুয়ারি অবৈধ এবং লুণ্ঠিত অস্ত্রধারীদের আত্মসমর্পণের জন্য রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লা যে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, তার পর আজ নিরাপত্তা পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড়ি ও উপত্যকা, উভয় অঞ্চলের মানুষের অতিরিক্ত সময়ের দাবির প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার লুণ্ঠিত ও অবৈধ অস্ত্রশস্ত্ৰ সমর্পণের সময়সীমা আগামী ৬ মার্চ বিকাল ৪.০০টা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন রাজ্যপাল।

প্রসঙ্গত প্রায় ২২ মাস আগে শুরু হওয়া জাতিগত সহিংসতার নামে মণিপুরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের কাছ থেকে এবং বিভিন্ন থানা থেকে কয়েক হাজার অস্ত্রশস্ত্র লুট করা হয়েছিল। রাজ্যপালের আবেদনে সাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত যুব স্বেচ্ছাসেবক, কমিউনিটি লিডার, সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন, মহিলা সংগঠন সহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর বহুজন স্বেচ্ছায় প্রায় ৪,১০০টি অবৈধভাবে মজুত অস্ত্রশস্ত্র, সেনা-পোশাক ও হেলমেট, সামরিক অন্য সরঞ্জাম সমর্পণ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *