ট্যাংরাকান্ডে অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু

কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): ট্যাংরাকান্ডে অভিযোগের ভিত্তিতে এবার অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলার রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

বুধবার ট্যাংরায় একই বাড়ির তিনটি আলাদা ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল তিনজনের মৃতদেহ। তাদের মধ্যে দুজন মহিলা এবং একজন নাবালিকা। তাদের প্রত্যেকেরই হাতের শিরা কাটা ছিল। মৃত দুই গৃহবধূরা হলেন সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে। আর নাবালিকার নাম প্রিয়ম্বদা। এদের মধ্যে সুদেষ্ণা দে’র বাবা থানায় অভিযোগ জানিয়ে মামলা রুজু করেছেন। তাঁর দাবি মেয়েকে খুন করা হয়েছে। স্পষ্ট করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি তিনি।

ট্যাংরার এই রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। প্রথমত বাড়ির সবার যদি একসাথে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা থেকে থাকে তাহলে তারা আলাদা আলাদা ভাবে কেন করলেন? মৃতদেহগুলি যদি দোতলায় থাকে, তাহলে ম্যাজেনাইন ফ্লোরে রক্তের দাগ কেন? মঙ্গলবার দিনভর পাওনাদাররা এসে ডাকাডাকি করার পরেও কেউ দরজা খোলেনি কেন? তাহলে কি আরও আগে মহিলাদের মৃত্যু হয়েছিল? বিষয়টা লুকোতেই কি বাড়ির পুরুষরা দরজা খোলেননি? একই দাবি পাশের বাড়ির কেয়ারটেকারের।

কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তবে আসলে কারণ কী? কেন মৃত্যু হল একই পরিবারের তিন সদস্যের? সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকেই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন ভিসেরার কেমিক্যাল পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ওই পরিবারের আহত সদস্যরা সুস্থ হলেই তাঁদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মনোজ ভার্মা।

ভাবাচ্ছে আরও একটা বিষয়। তা হল বাড়ির সবার যদি পরিকল্পিতভাবে আত্মহত্যা করা পরিকল্পনা থেকেই থাকে তাহলে ৩ জন মহিলা মারা গেলেন অথচ তিনজন পুরুষ এখনও জীবিত? তাই আবারও প্রশ্ন উঠছে আত্মহত্যা না কি খুন? কী কারণে এই চরম পরিণতি হল একই পরিবারের তিন সদস্যের?

পরিবারের জীবিত সদস্যরাই প্রথম পুলিশকে আত্মহত্যার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সকলে একসঙ্গে পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। হাতের শিরা কেটে তিনজন আত্মহত্যা করেছেন। আর তাঁরা আত্মহত্যা করার জন্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে নাবালক সহ দুই ভাই স্বাভাবিক ছন্দেই গাড়িতে উঠছেন।