শীত বাড়লেও কমছে শাক-সবজির দাম, কৃষকরা মুখ থুবড়ে পড়লেন

আগরতলা, ২৭ জানুয়ারি : শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে শাক-সবজি সহ বিভিন্ন কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। অগ্নিমূল্যের বাজারে এটি এক বিরল ঘটনা। কিন্তু এই খুশির ছায়ায় লুকিয়ে রয়েছে কৃষকদের দুঃখের গল্প। নায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা মুখ থুবড়ে পড়েছেন।

বর্তমানে শীতের ভরা মরশুমে বাজারে শাক-সবজির দাম কমে যাওয়া সকলকে আশ্চর্য করেছে। বাজারে গিয়ে খদ্দেররা পছন্দমতো শাক-সবজি কিনে বাড়ি ফিরছেন। পৌষ মাস বিদায় নেওয়ার পর থেকেই মাঘ মাসের শুরুতে বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে।

এই বিষয়ে একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা তাদের জমিতে উৎপাদিত শাক-সবজি বিক্রি করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে দাম অনেক কম। ফলে তারা লাভের পরিবর্তে লোকসান গুনছেন।

শীতকালে শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া, বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ এবং পরিবহন ব্যয় কম হওয়া ইত্যাদি কারণে দাম কমে যাওয়ার পিছনে প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একদিকে যেখানে তারা কম দামে শাক-সবজি কিনতে পেরে খুশি, অন্যদিকে কৃষকদের দুর্দশার কথা ভেবে তারা চিন্তিত।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় ফুলকপি প্রতি কিলো বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকার মধ্যে। অথচ শারদীয়ার মৌসুমে ফুলকপি প্রতি কিলো ২৫০ টাকা ৩০০ টাকা় বিক্রি হয়েছে। বাঁধাকপি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ শীতের আগে গ্রীষ্মকালেও বাঁধাকপি কিলো বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। গ্রীষ্মকালে বেগুনের মূল্য প্রতি কিলো ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতিকিলো ২০ টাকায়। অথচ এই টমেটো ও শীতের মরশুম শুরুর আগে বিক্রি হয়েছে প্রতি কিলো ৮০ টাকা থেকে ১০০ টা়কায় শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কিলো ১৫ টাকায়। গাজর ১০ টাকায় নেমেছে। কাঁচা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কিলো ৩০ টাকায়। এক কথায় প্রায় সকল সবজির দাম কমেছে।

মেঘালয়, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য কয়েকটি রাজ্য থেকে সারা বছর যে পরিমাণ শাকসবজি রাজ্যে আসতো তা এখন শীতের এই সময় আর সেইভাবে আসছে না বলে ধর্মনগরের পাইকারি এক সবজি ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। এদিকে রাজ্যের উৎপাদিত সবজির মূল্য এইভাবে কমে যাওয়ার কারণে বহু কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। শীতকালে শাক-সবজির দাম কমে যাওয়া একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের জন্য সুসংবাদ, অন্যদিকে কৃষকদের জন্য এটি এক দুঃস্বপ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *