আগরতলা, ১৮ জানুয়ারি: বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের মেডিকেল কলেজগুলির মধ্যে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজের পর দ্বিতীয় রাজ্য হিসাবে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকগণ ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) পদ্ধতিতে কৃত্রিম গর্ভধারণে সফলতার নজির সৃষ্টি করেছেন। রাজ্যের বাসিন্দা ৩২ বছরের এক মহিলা বিগত ১৪ বৎসর যাবৎ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছিলেন।
তিনি গত ২০২৩ সালে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর (ডাঃ) অভিজিৎ শীলের তত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করেন। ডাঃ শীল রোগীনির পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে দেখতে পান যে মহিলার ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লকেজ রয়েছে। এই টিউবাল ব্লকেজটির চিকিৎসার জন্য তিনি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর গত ৫ অক্টোবর ২০২৩ আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে মহিলার হিস্টেরোস্কোপিক টিউবাল ক্যানুলেশন অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারে ছিলেন আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর ডাঃ অভিজিৎ শীল, স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর (ডাঃ) সলিল বিন্দু চক্রবর্তী এবং অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর (ডাঃ) সূপর্ণা সূত্রধর প্রমুখ।
তারপর স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকগণ মহিলাকে বন্ধ্যাত্বের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন। তখন মহিলা আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালেই স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর (ডাঃ) অভিজিৎ শীল এর তত্বাবধানেই উনার বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। ডাঃ শীল মহিলার পরবর্তী পর্যায়ের উন্নত চিকিৎসা প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর ৮ এপ্রিল ২০২৪ মহিলার জরায়ুতে গর্ভধারণের লক্ষ্যে ইন্ট্রাইউটারিন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে শুক্রাণু প্রতিস্থাপন করেন এবং তাতে মহিলার গর্ভধারণ সম্ভব হয়।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) হল একটি কৃত্রিম গর্ভধারণ প্রক্রিয়া, যাতে স্বামীর শুক্রাণু মেডিসিনের সাহায্যে ওভাম জরায়ুর ভিতরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ধরনের প্রক্রিয়ায় গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব রাজ্যে প্রথম।
দ্বিতীয় রাজ্য হিসাবে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতাল স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকগণ এই সাফল্য পেয়েছেন। পরবর্তী কালে মহিলা নিয়মিত আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগেই প্রাক প্রসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতেন। গত ৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে ৩ কেজি ওজনের একটি সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ আছেন।
উল্লেখ্য, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিষেশজ্ঞ প্রফেসর (ডাঃ) জয়ন্ত রায় ও প্রফেসর (ডাঃ) জহর লাল বৈদ্য-এর প্রচেষ্টায় গত দুই বৎসর আগে এই ধরনের ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) পদ্ধতিতে কৃত্রিম বন্ধ্যাত্বের গর্ভধারণে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল। রাজ্যেই বিশেষজ্ঞ স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ চিকিৎসকদের দ্বারা উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা লাভ করে সন্তানের মুখ দেখতে পেয়ে মহিলার পরিবার পরিজনেরা আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানিয়েছেন।