আগরতলা, ১৫ জানুয়ারী : ত্রিপুরায় ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে শিক্ষাগত মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় এবং বিধায়ল সুদীপ রায় বর্মন। আজ ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনে বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় এবং সুদীপ রায় বর্মনের শিক্ষা বিষয়ক উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষকের ঘাটতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন শিক্ষা মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. মানিক সাহা।
এদিন বিধানসভায় বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সংগীত, শিল্পকলা এবং যোগের মতো নতুন চালু হওয়া বিষয়গুলির জন্য শিক্ষকের অভাব; আগরতলার বয়েজ বোধজং স্কুলের ছাত্ররা করিডোরে বসে মিড-ডে মিল খেতে বাধ্য হচ্ছে; নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র প্রতি ১০০০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে; অভিভাবকরা ‘বিদ্যাজ্যোতি’ স্কুলের ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন, যার ফলে তারা তাদের সন্তানদের সাধারণ সরকারি স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন; শিক্ষকের অপর্যাপ্ত সংখ্যা এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন এবং বিদ্যমান উভয় শিক্ষাবিদদের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ; এই ধরনের সমস্যা অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় কতটা উপযুক্ত হবে ?
এ প্রশ্নের জবাবে, মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগের রূপরেখা তুলে ধরেন। ১২৫ টি ‘বিদ্যাজ্যোতি’ স্কুলের কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে বলে জানান তিনি। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞানের বিষয় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে; ত্রিপুরার শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড (টিআরবিটি) বিশেষ শিক্ষাবিদদের জন্য ২০০ টি পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, যার মধ্যে ৮৮ টি পূরণ করা হয়েছে এবং শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক এবং ১১৮ জন কম্পিউটার শিক্ষা শিক্ষকের পদ পূরণ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সরকার এই স্কুলগুলিতে শিক্ষাগত পরিস্থিতি উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।এদিকে, বিধানসভায় বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে বাংলা থেকে ইংরেজিতে ছাত্রদের আকস্মিক রূপান্তর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের এখন ইংরেজিতে পরীক্ষা দিতে হয়। অনেককে গ্রেস মার্ক দিয়ে পাস করানো হচ্ছে।
এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ড. সাহা বলেন, গত পরীক্ষায়, ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দশম শ্রেণীতে পাশ করেছে এবং ৭৫ শতাংশ দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এই স্কুলগুলো ধীরে ধীরে বাংলা থেকে ইংরেজি মাধ্যমের রূপান্তরিত হচ্ছে। তাছাড়া, সিবিএসই বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ৪১টি প্রশিক্ষণ শিবির চলছে এবং কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সংস্থান ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সিবিএসই-এর সেন্টার অফ এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “জেলা শিক্ষা অফিসারদের দ্বারা পর্যালোচনা সভাও করা হচ্ছে। তাছাড়া, অধ্যক্ষদের জন্য ভার্চুয়াল সম্মেলন, জেলা সমন্বয়কারী নিয়োগ, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য নমুনা প্রশ্নপত্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাথে তিনি যোগ করেন, বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর বিশেষ ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।