সোলার পাম্প স্থাপন প্রকল্পে উপকৃত রাজ্যের কৃষক, আর্থিক সহযোগিতায় দেশে নজির স্থাপন ত্রিপুরার : কৃষি মন্ত্রি

আগরতলা, ১৩ জানুয়ারি : সোলার পাম্প স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। চাষাবাদে প্রয়োজনীয় সেচ ব্যবস্থায় ওই প্রকল্প দারুন প্রভাব ফেলেছে। সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরা সরকার ওই প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য নজির স্থাপন করেছে। আজ বিধানসভায় তেলিয়ামুড়ার বিধায়ক তথা সরকারি মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়ের দৃষ্টি অকর্ষণী নোটিশের জবাবে ত্রিপুরার কৃষকদের সহায়তায় রাজ্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে এই তথ্য দিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ। 

তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার পি. এম. কুসুম স্কিমে ভর্তুকিতে সৌর শক্তি চালিত সোলার পাম্প স্থাপন করে নিশ্চিত সেচের ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে জলের ব্যবহার করার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জমিতে জল সেচের ব্যবস্থা করে তাদের দ্বিগুন ফসল ও দ্বিগুন আয়ের জন্য অগ্রনী পদক্ষেপ নিয়েছে। 

সাথে তিনি যোগ করেন, বিভিন্ন অঞ্চলে পাম্প বসানোর কাজ কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে। এই ক্ষেত্রে অ্যাসপোইরেশন ও এডিসি ব্লকগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা সৌর পাম্প দিয়ে অত্যন্ত উপকৃত হচ্ছেন কারণ তারা একক ফসলের পরিবর্তে দ্বিগুন উৎপাদন শুরু করতে পেরেছেন এবং তাতে দ্বিগুণ আয় করছেন।

তিনি আরো বলেন, রাজ্যে সৌর শক্তি চালিত সোলার পাম্প স্থাপনের মোট লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০,৮৯৫ টি। এর মধ্যে বিভিন্ন জেলায় সর্বমোট ৩৬১৬ টি পাম্প বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। তাঁর দাবি, ধলাই জেলায় ৩৬১, উনকোটি জেলায় ৩৩৪, গোমতি জেলায় ২৯০, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৪৬০, খোয়াই জেলায় ৪৫৯, সিপাহীজলা জেলায় ৭১৫, পশ্চিম ত্রিপুরা ৭৭৭, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ২২০ টি পাম্প বসানো হয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বমোট ৭২৩২ একর জমি জলসেচের আওতায় আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৩৬১৬ জন কৃষক উপকৃত হবেন।  

মন্ত্রী রতন লাল নাথ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ৫০১৫ টি পাম্প বসানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে ধলাই জেলায় ৫৪৫, উনকোটি জেলায় ৩৮৬, গোমতি জেলায় ৪৫২, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৩৫৯, খোয়াই জেলায় ৪৩৮, সিপাহীজলা জেলায় ১৫৬৫, পশ্চিম ত্রিপুরা ৯০৮, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৩৬২ টি পাম্প বসানোর কাজ চলছে। এক্ষেত্রে ১০,০৩০ একর (২৫,০৭৫ কানি) জমি জলসেচের আওতায় আনার কাজ চলছে। এতে ৫০১৫ জন কৃষক উপকৃত হবেন।  লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ১০,৮৯৫ টি পাম্প বসানো সম্পূর্ণ হলে ২১,৭৯০ একর (৫৪,৪৭৫ কানি) জমি জলসেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে এবং এক্ষেত্রে মোট খরচ হবে ৩২৪ কোটি টাকা।

সোলার এগ্রিকালচার পাম্প স্থাপনের সুবিধাগুলোর কথা উল্লেখ করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পে কমপক্ষে ২৫ বৎসরের জন্য নিশ্চিত জলসেচের গ্যারান্টি রয়েছে। এছাড়াও এক ফসলের পরিবর্তে অধিক ফসল উৎপাদনের মাধমে আয় দ্বিগুণ ও তিনগুন করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তাছাড়া এই প্রকল্প সৌর চালিত হওয়ার এতে বিদ্যুৎ বিল বাবদ কোনো খরচ নেই। এদিকে, সরকার থেকে জলের উৎস তৈরী করার জন্য সর্বোচ্চ ১,১৯,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।  মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় জলের উৎস তৈরী করার জন্য খননের খরচ ১.১৯ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজ্য সরকার বহন করেছে। যেখানে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে জলের উৎস তৈরী করার জন্য খননের খরচ কৃষককে বহন করতে হয়।