BRAKING NEWS

মনমোহন সিংহ প্রয়াত

নয়াদিল্লি, ২৬ ডিসেম্বর : বছর শেষে মিলল দু:সংবাদ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ প্রয়াত হয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পুরোধাপুরুষের সারা দেশেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স
বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দিল্লি এমসে। রাত ৮টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের জরুরি বি‌ভাগে। রাতে হাসপাতালেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

দিল্লি এমসের তরফে জানানো হয়েছে, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাড়িতেই হঠাৎ সংজ্ঞা হারান তিনি। রাত ৮টা ৬ মিনিটে তাঁকে দিল্লি এমসের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক দলের সবরকম চেষ্টার পরেও তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। রাত ৯টা ৫১ মিনিটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দিল্লি এমস।

পিভি নরসিংহ রাও পরিচালিত সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন ড. মনমোহন। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট জমানায় ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদেও আসীন ছিলেন তিনি। টানা ৩৩ বছর রাজ্যসভার সাংসদ থাকলেও এ বছরই তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। যদিও বেশ কিছু বছর ধরেই তাঁকে আর সরাসরি রাজনীতির ময়দানে সেই অর্থে দেখা যায়নি।

অসাধারণ মেধাবী মনমোহন সিং অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর তিনি কেমব্রিজে চলে যান এবং অবশেষে অক্সফোর্ড থেকে ডি ফিল অর্জন করেন। ভারতে উদার অর্থনীতির জনক ছিলেন মনমোহন সিং। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কোভিডে আক্রান্ত হন তিনি। হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়েছিল। তবে সেই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার পর থেকে শরীর কমবেশি অসুস্থই ছিল তাঁর।

তাঁর অসুস্থতার খবর পাওয়া মাত্রই হাসপাতালে পৌঁছে যান কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তড়িঘড়ি কর্নাটকের বেলাগাভি থেকে তড়িঘড়ি দিল্লি ফিরে আসেন রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়্গেরাও। আসেন সোনিয়া গান্ধীও। স্থগিত করে দেওয়া হয় কর্ণাটকের বেলগাভিতে আগামীকালের যাবতীয় কর্মসূচি।

তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সামাজিক মাধ্যমে বার্তায় তিনি লেখেন, ভারত তার অন্যতম বিশিষ্ট নেতা ডঃ মনমোহন সিং জি-এর মৃত্যুতে শোকাহত। নম্র উত্স থেকে উঠে তিনি একজন সম্মানিত অর্থনীতিবিদ হয়ে ওঠেন। তিনি অর্থমন্ত্রী সহ বিভিন্ন সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যা বছরের পর বছর ধরে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিতে একটি শক্তিশালী ছাপ রেখে গেছে। সংসদে তার হস্তক্ষেপও ছিল অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ। আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা। সামাজিক মধ্যমেয়ে শোকবার্তায় তিনি লেখেন, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং জি-এর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। জাতি গঠনে এবং দেশের অর্থনৈতিক দৃশ্যপট গঠনে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদেহী আত্মা যেন চির শান্তি পায়! ওম শান্তি।

এদিন তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জে পি নাড্ডা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *