আগরতলা, ২৩ ডিসেম্বর: রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সতর্কতা ও জনসচেতনতা অবলম্বনের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব। সড়ক সুরক্ষার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যস্তরে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সচিবালয়ে রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের ১৫তম বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন।
উল্লেখ্য, রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান হচ্ছেন পরিবহন মন্ত্রী। রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রয়েছেন ১১ জন।
বৈঠকে পরিবহন মন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমিয়ে আনতে সরকার জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি জারি রেখেছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার, ইন্টারসেপ্টার ভেহিক্যাল ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্থ লোকেদের দ্রুত চিকিৎসায় এগিয়ে আসা সাহায্যার্থীদের ৫ হাজার টাকা গুড সামারিটান পুরস্কারের সংস্থান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের ২৫টি কলেজে সহসাই সড়ক সুরক্ষা, ভোক্তা সুরক্ষা, মাদক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কিত বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। পরিবহন, খাদ্য এবং স্বারাষ্ট্র দপ্তরের সমন্বয়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। বৈঠকে পূর্তদপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পরিবহন দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া, ডিআইজি মনচক ইন্নার, ট্রাফিক পুলিশের সুপার মানিক দাস, বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ সহ পরিবহন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পরিবহন দপ্তরে অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী সড়ক সুরক্ষা বিষয়ে দপ্তরের কাজকর্মের সাফল্য, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গৃহীত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নতুন উদ্যোগ সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সড়ক সুরক্ষা কমিটির নির্দেশিকায় প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ কমানোর উল্লেখ রয়েছে। সেই নির্দেশ মোতাবেক সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে রাজ্যে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১৩ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জেলাস্তরে জেলা সড়ক সুরক্ষা কমিটির সভা প্রতি মাসে দু’বার করে আয়োজন করা, রাজ্যে একটি ডেডিকেটেড রোড সেফটি উইং গঠন ইত্যাদি নির্দেশিকাও রয়েছে। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসকে সড়ক সুরক্ষা মাস হিসাবে পালন করা হবে। তিনি আরও বলেন, পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে ত্রিপুরা ভেহিক্যাল স্ক্র্যাপিং পলিসি-২০২৪ সূচনা করা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন ও সম্যক ধারণা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত অ্যান্টি ড্রাগ আডিকশান কমিটি এবং সড়ক সুরক্ষা কমিটি গঠনের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রযুক্তিগত মনিটরিং-এর জন্য eDAR পরিষেবাটি শীঘ্রই চালু করার বিষয়ে সভায় প্রাধান্য পায়। বৈঠকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারীদের জন্য ফুটপাথের সু-ব্যবস্থা, রাজ্য এবং জেলার দুর্ঘটনা প্রবন এলাকা ও ব্ল্যাকস্পটগুলিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়।